আল কুরআন


সূরা সোয়াদ (আয়াত: 13)

সূরা সোয়াদ (আয়াত: 13)



হরকত ছাড়া:

وثمود وقوم لوط وأصحاب الأيكة أولئك الأحزاب ﴿١٣﴾




হরকত সহ:

وَ ثَمُوْدُ وَ قَوْمُ لُوْطٍ وَّ اَصْحٰبُ لْـَٔیْکَۃِ ؕ اُولٰٓئِکَ الْاَحْزَابُ ﴿۱۳﴾




উচ্চারণ: ওয়াছামূদুওয়া কাওমুলুতিওঁ ওয়া আসহা-বুল আইকাতি উলাইকাল আহযা-ব।




আল বায়ান: সামূদ, কওমে লূত ও আইকার অধিবাসীরা। এরাই ছিল (নবীদের বিরুদ্ধাচরণকারী) দলসমূহ ।




আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া: ১৩. সামূদ, লুত সম্প্রদায় ও আইকা'র অধিবাসী; ওরা ছিল এক-একটি বিশাল বাহিনী।




তাইসীরুল ক্বুরআন: আর সামূদ, লূতের জাতি ও আইকাবাসী- এরা ছিল বিরাট বিরাট দল।




আহসানুল বায়ান: (১৩) সামূদ, লূত ও আইকাবাসী (শুআইব সম্প্রদায়),[1] ওরাও ছিল এক একটি বিশাল বাহিনী।



মুজিবুর রহমান: আর সামূদ, লূত সম্প্রদায় ও আইকা’র অধিবাসী। তারা ছিল এক একটি বিশাল বাহিনী।



ফযলুর রহমান: ছামূদ, লূতের সমপ্রদায় ও আইকার অধিবাসীরা (আইকা: শোয়াইব আ.-এর এলাকার নাম)। তারাই হল (অতীতের) বড় বড় দল।



মুহিউদ্দিন খান: সামুদ, লূতের সম্প্রদায় ও আইকার লোকেরা। এরাই ছিল বহু বাহিনী।



জহুরুল হক: আর ছামুদজাতি ও লুতের স্বজাতি ও অরণ্যের বাসিন্দারা। ওরাও ছিল বিশাল বাহিনী।



Sahih International: And [the tribe of] Thamud and the people of Lot and the companions of the thicket. Those are the companies.



তাফসীরে যাকারিয়া

অনুবাদ: ১৩. সামূদ, লুত সম্প্রদায় ও আইকা´র অধিবাসী; ওরা ছিল এক-একটি বিশাল বাহিনী।


তাফসীর:

-


তাফসীরে আহসানুল বায়ান

অনুবাদ: (১৩) সামূদ, লূত ও আইকাবাসী (শুআইব সম্প্রদায়),[1] ওরাও ছিল এক একটি বিশাল বাহিনী।


তাফসীর:

[1] আইকাবাসী কারা ছিল, তা জানার জন্য দেখুন সূরা শুআরার ১৭৬নং আয়াতের টীকা।


তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ


তাফসীর: ১২-১৬ নম্বর আয়াতের তাফসীর :



এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সমসাময়িকসহ সকল যুগের কাফির ও মুশরিকদের লক্ষ্য করে বলছেন : শুধু তোমরাই না বরং তোমাদের পূর্বযুগে অনেক জাতি যেমন নূহ, আদ, লূত (আঃ)-এর জাতি এবং ফির‘আউন নাবী-রাসূলদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল। ফলে তাদেরকে শাস্তি পাকড়াও করেছে। অতএব তোমরাও এরূপ করলে তোমাদের প্রতি বিধান ব্যতিক্রম হবে না। এ সম্পর্কে সূরা আ‘রাফ, হূদ ও নামলসহ পূর্বে একাধিক স্থানে আলোচনা করা হয়েছে।



(ذُو الْأَوْتَادِ)



অর্থ “কীলকওয়ালা ফির‘আউন” তাফসীরে এর কয়েকটি অর্থ পাওয়া যায়, যেমন : ফির‘আউন অনেক শক্তি ও সৈন্যবাহিনীর অধিকারী ছিল। কেউ বলেছেন, সে মানুষকে চিৎ করে শুইয়ে তার চার হাত পায়ে কীলক এঁটে দিত এবং তার ওপর সাপ বিচ্ছু ছেড়ে দিত। এটাই ছিল তার শাস্তি দানের পদ্ধতি। কেউ বলেছেন, এখানে কীলক দ্বারা সুদৃঢ় অট্টালিকা বুঝানো হয়েছে।



(وَّأَصْحٰبُ لْئَيْكَةِ)



‘আইকার অধিবাসীরা’ আইকা অর্থ জঙ্গল, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল শুআইব (আঃ)-এর জাতি। এটা বলার কারণ হল, এই অবাধ্য জাতি প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ট হয়ে নিজেদের বসতি ছেড়ে জঙ্গলে আশ্রয় নিলে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সেখানেই ধ্বংস করে দেন। এটাও বলা হয় যে, উক্ত জঙ্গলে ‘আইকা’ বলে একটা গাছকে তারা পূজা করত। যার আশপাশ জঙ্গল বেষ্টিত ছিল। এদের সম্পর্কে সূরা আ‘রাফের ৮৫-৯৩ ও হূদের ৮৪-৯৫ নম্বর আয়াতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।



(صَيْحَةً وَّاحِدَةً)



অর্থাৎ কিয়ামতের জন্য যে ফুঁৎকার দেয়া হবে তারা সে ফুঁৎকারের অপেক্ষা করে। فَوَاقٍ এর একাধিক অর্থ রয়েছে, যেমন : (এক) একবার দুগ্ধ দোহনের পর পুনরায় স্তনে দুধ আসার মধ্যবর্তী সময়কে فَوَاقٍ বলা হয়। (দুই) সুখ-শান্তি। উদ্দেশ্য হল; ইসরাফিল (আঃ)-এর শিঙ্গার ফুঁক অনবরত চলতে থাকবে এতে কোন বিরতি থাকবে না (কুরতুবী)। قِطَّ অর্থ শাস্তির অংশ, অর্থাৎ মক্কার মুশরিকরা বলে আমরা পথভ্রষ্ট হলে বিচার দিনের পূর্বে আমাদেরকে শাস্তি দেয়া হোক।



আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :



১. রাসূলদের বিরোধিতা করা কাফের-মুশরিকদের কাজ।

২. ফিরআউনের মতো শক্তিধর শাসকও রাসূলের বিরোধিতা করে সফল হয়নি। অতএব এ থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।


তাফসীরে ইবনে কাসীর (তাহক্বীক ছাড়া)


তাফসীর: ১২-১৬ নং আয়াতের তাফসীর:

পূর্বযুগীয় এসব কাফিরের ঘটনা বেশ কয়েক জায়গায় বর্ণিত হয়েছে যে, তাদের পাপের কারণে কিভাবে তাদের উপর আল্লাহর আযাব এসেছিল এবং তারা সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। পূর্বযুগের ঐ সব কাফিরের দল ধন-সম্পদে ও সন্তান-সন্ততিতে এবং শক্তি-সামর্থে এ যুগের এসব কাফিরের অপেক্ষা বহুগুণে অগ্রবর্তী ছিল। এদের ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি এবং শক্তি-সামর্থ্য তাদের তুলনায় অতি নগণ্য। এতদসত্ত্বেও আল্লাহর শাস্তি এসে যাবার পর এগুলো তাদের কোনই উপকারে আসেনি।

অতঃপর আল্লাহ তা'আলা অতীত যুগের ঐ সব কাফির দলের ধ্বংসের কারণ প্রসঙ্গে বলেন যে, তাদের প্রত্যেকেই রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছে। তারা ছিল রাসূলদের চরম শত্রু।

মহান আল্লাহ বলেনঃ এরা তো অপেক্ষা করছে একটি মাত্র প্রচণ্ড নিনাদের, যাতে কোন বিরাম থাকবে না। আর এতেও কোন বিলম্ব নেই। একটি মাত্র প্রচণ্ড শব্দ হবে এবং তা কানে আসা মাত্রই সবাই অজ্ঞান ও প্রাণহীন হয়ে পড়বে। ঐ লোকগুলো এর অন্তর্ভুক্ত হবে না যাদেরকে আল্লাহ স্বতন্ত্র করে নিবেন।

(আরবী) শব্দের অর্থ হচ্ছে অংশ। এখানে এর দ্বারা মুশরিকদের নির্বুদ্ধিতা এবং তাদের আল্লাহর আযাবকে অসম্ভব মনে করতঃ নির্ভয় হয়ে আযাব চাওয়ার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। যেমন অন্য জায়গায় আল্লাহ তা'আলা কাফিরদের উক্তি উদ্ধৃতি করেছেনঃ (আরবী) অথাৎ “হে আল্লাহ! যদি এটা আপনার নিকট হতে সত্য হয়ে থাকে তবে আকাশ হতে আমাদের উপর প্রস্তর বর্ষণ করুন অথবা অন্য কোন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি আমাদের উপর নাযিল করুন।” (৮:৩২)।

একথাও বলা হয়েছে যে, তারা তাদের জান্নাতের অংশ এখানে চেয়েছিল। তারা যা কিছু বলেছিল সবই ওটা মিথ্যা ও অসম্ভব মনে করার কারণেই ছিল। ইমাম ইবনে জারীর (রঃ)-এর উক্তি এই যে, দুনিয়ায় তারা যে ভাল ও মন্দের দাবীদার ছিল তা তারা তাড়াতাড়ি চেয়েছিল। এ উক্তিটিই সঠিক। যহ্হাক (রঃ) ও ইসমাঈল (রঃ)-এর তাফসীরের সারমর্ম এটাই। এসব ব্যাপারে আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন। আল্লাহ্ তা'আলা স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে তাদের স্ক্রিপের ক্ষেত্রে ধৈর্যধারণের উপদেশ দিচ্ছেন।





সতর্কবার্তা
কুরআনের কো্নো অনুবাদ ১০০% নির্ভুল হতে পারে না এবং এটি কুরআন পাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এখানে বাংলা ভাষায় অনূদিত প্রায় ৮ জন অনুবাদকের অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা তাদের নির্ভুলতার গ্যারান্টি দিতে পারি না।