সূরা আল-আম্বিয়া (আয়াত: 76)
হরকত ছাড়া:
ونوحا إذ نادى من قبل فاستجبنا له فنجيناه وأهله من الكرب العظيم ﴿٧٦﴾
হরকত সহ:
وَ نُوْحًا اِذْ نَادٰی مِنْ قَبْلُ فَاسْتَجَبْنَا لَهٗ فَنَجَّیْنٰهُ وَ اَهْلَهٗ مِنَ الْکَرْبِ الْعَظِیْمِ ﴿ۚ۷۶﴾
উচ্চারণ: ওয়া নূহান ইযনা-দা-মিন কাবলুফাছতাজাবনা-লাহূফানাজ্জাইনা-হুওয়াআহলাহূমিনাল কারবিল ‘আজীম।
আল বায়ান: আর স্মরণ কর নূহের কথা, ইতঃপূর্বে যখন সে আমাকে ডেকেছিল, তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম। অতঃপর তাকে ও তার পরিবারবর্গকে আমি মহাবিপদ থেকে উদ্ধার করেছিলাম।
আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া: ৭৬. আর স্মরণ করুন নূহকে; পূর্বে তিনি যখন ডেকেছিলেন(১) তখন আমরা সাড়া দিয়েছিলাম তার ডাকে এবং তাকে ও তার পরিজনবৰ্গকে মহাসংকট(২) থেকে উদ্ধার করেছিলাম,
তাইসীরুল ক্বুরআন: স্মরণ কর নূহের কথা, ইতোপূর্বে যখন সে (আমাকে) ডেকেছিল, তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম আর তাকে ও তার পরিবারবর্গকে মহা বিপদ থেকে রক্ষা করেছিলাম।
আহসানুল বায়ান: (৭৬) আর (স্মরণ কর) নূহকে; পূর্বে সে যখন আহবান করেছিল, তখন আমি সাড়া দিয়েছিলাম তার আহবানে এবং তাকে ও তার পরিজনবর্গকে মহাসংকট হতে উদ্ধার করেছিলাম।
মুজিবুর রহমান: স্মরণ কর নূহকে; পূর্বে সে যখন আহবান করেছিল তখন আমি সাড়া দিয়েছিলাম তার আহবানে এবং তাকে ও তার পরিজনবর্গকে মহাসংকট হতে উদ্ধার করেছিলাম।
ফযলুর রহমান: আর নূহের কথা স্মরণ করো, যখন সে পূর্বে (আমাকে) ডেকেছিল। আমি তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম এবং তাকে ও তার অনুসারীদেরকে মহাবিপদ থেকে উদ্ধার করেছিলাম।
মুহিউদ্দিন খান: এবং স্মরণ করুন নূহকে; যখন তিনি এর পূর্বে আহবান করেছিলেন। তখন আমি তাঁর দোয়া কবুল করেছিলাম, অতঃপর তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে মহা সংকট থেকে উদ্ধার করেছিলাম।
জহুরুল হক: আর নূহের ক্ষেত্রে, -- স্মরণ করো, তিনি ইতিপূর্বে আহ্বান করেছিলেন, সেজন্য আমরা তাঁর প্রতি সাড়া দিয়েছিলাম, তাই তাঁকে ও তাঁর পরিজনবর্গকে আমরা উদ্ধার করেছিলাম এক বিরাট সংকট থেকে।
Sahih International: And [mention] Noah, when he called [to Allah] before [that time], so We responded to him and saved him and his family from the great flood.
তাফসীরে যাকারিয়া
অনুবাদ: ৭৬. আর স্মরণ করুন নূহকে; পূর্বে তিনি যখন ডেকেছিলেন(১) তখন আমরা সাড়া দিয়েছিলাম তার ডাকে এবং তাকে ও তার পরিজনবৰ্গকে মহাসংকট(২) থেকে উদ্ধার করেছিলাম,
তাফসীর:
(১) নূহের দো'আর প্রতি ইংগিত করা হয়েছে। সুদীর্ঘকাল নিজের জাতির সংশোধনের অবিরাম প্রচেষ্টা চালাবার পর শেষে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হয়ে তিনি যে দো'আ করেছিলেন। “হে রব! আমি হেরে গেছি আমাকে সাহায্য করো।” [সূরা আল কামারঃ ১০] এবং “হে আমার রব! পৃথিবী পৃষ্ঠে একজন কাফেরকেও ছেড়ে দিয়ো না।” [সূরা নূহঃ ২৬]
(২) “মহাসংকট” অৰ্থ একটি অসৎ কর্মশীল জাতির মধ্যে জীবন যাপন করার বিপদ অথবা মহাপ্লাবন। নূহের কাহিনী বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন সূরা আল আ'রাফ ৫৯ থেকে ৬৪, সূরা ইউনুস ৭১ থেকে ৭৩, সূরা হুদ ২৫ থেকে ৪৮ এবং বনী ইসরাঈল ৩ আয়াতসমূহ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অনুবাদ: (৭৬) আর (স্মরণ কর) নূহকে; পূর্বে সে যখন আহবান করেছিল, তখন আমি সাড়া দিয়েছিলাম তার আহবানে এবং তাকে ও তার পরিজনবর্গকে মহাসংকট হতে উদ্ধার করেছিলাম।
তাফসীর:
-
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ
তাফসীর: ৭৬-৭৭ নং আয়াতের তাফসীর:
উক্ত আয়াতদ্বয়ে নূহ (عليه السلام)-এর কথা আলোচনা করা হয়েছে। مِنْ قَبْلُ অর্থাৎ ইবরাহীম (عليه السلام)-এর পূর্বে। নূহ (عليه السلام) ইবরাহীম (عليه السلام)-এর পূর্বে দুনিয়াতে এসে স্বজাতির মাঝে তাওহীদের দাওয়াত দিয়েেিছলেন। তিনি বিভিন্নভাবে দাওয়াত দিয়েছিলেন, তাঁর দাওয়াতী পদ্ধতিগুলো সূরা নূহে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু যখন তাঁর জাতি দাওয়াত গ্রহণ করল না, তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করলেন এভাবে: যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন
(وَقَالَ نُوْحٌ رَّبِّ لَا تَذَرْ عَلَي الْأَرْضِ مِنَ الْكٰفِرِيْنَ دَيَّارًا - إِنَّكَ إِنْ تَذَرْهُمْ يُضِلُّوْا عِبَادَكَ وَلَا يَلِدُوْآ إِلَّا فَاجِرًا كَفَّارًا)
“ নূহ আরো বলেছিল: হে আমার প্রতিপালক! পৃথিবীতে কাফিরদের মধ্য হতে কোন গৃহবাসীকে ছেড়ে দেবেন না। তুমি যদি তাদেরকে ছেড়ে দাও তারা তোমার বান্দাদেরকে বিভ্রান্ত করবে এবং যারা জন্ম লাভ করবে তারা হবে দু®কৃতিকারী ও কাফির।” (সূরা নূহ ৭১:২৬-২৭) আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ডাকে সাড়া দিলেন, তাঁকে ও তাঁর পরিবার তথা যারা তাঁর প্রতি ঈমান এনেছিল তাদেরকে রক্ষা করে অবাধ্য সবাইকে মহাপ্লাবনে ডুবিয়ে মারলেন।
এ স¤পর্কে সূরা হিজর, সূরা সফফাতের ৭৫-৭৭ নং, সূরা কামারের ১০-১১ নং আয়াতসহ অনেক স্থানে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলাকে একনিষ্ঠভাবে আহ্বান করলে আল্লাহ তা‘আলা আহ্বানে সাড়া দেন এবং বিপদ থেকে মুক্তি দান করেন।
২. অপরাধ করলে অবশ্যই তার জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে।
তাফসীরে ইবনে কাসীর (তাহক্বীক ছাড়া)
তাফসীর: ৭৬-৭৭ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেন যে, হযরত নূহকে (আঃ) তাঁর কওম যখন মিথ্যা প্রতিপাদন করে ও কষ্ট দেয় তখন তার প্রতিপালককে ডাক দিয়ে বলেনঃ “হে আল্লাহ! আমি অপারগ হয়ে গেছি। সুতরাং আপনি আমাকে সাহায্য করুন!` তিনি আরো বলেনঃ “হে আমার প্রতিপালক! পৃথিবীতে কাফিরদের মধ্য হতে কোন গৃহবাসীকে অব্যাহতি দিয়েন না। যদি আপনি তাদেরকে অব্যাহতি দেন তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে বিভ্রান্ত করবে এবং জন্ম দিতে থাকবে শুধু দুষ্কৃতিকারী ও কাফির।” আল্লাহ তাআলা তার প্রার্থনা কবুল করলেন। তিনি তাকে ও তার মু'মিন অনুসারীদেরকে পরিত্রাণ দেন। এবং তার পরিবার পরিজনকেও রক্ষা করেন। শুধু তাদেরকে নয় যাদের নাম ধ্বংস প্রাপ্তদের তালিকা ভুক্ত ছিল। তার উপর ঈমান আনয়নকারীদের সংখ্যা খুবই কম ছিল। আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবীকে (আঃ) তাঁর কওমের জুলুম ও অবিচার হতে মুক্তি দেন। সাড়ে নয়শত বছর তিনি তাদের মধ্যে অবস্থান করে তাদেরকে তাবলীগ করতে থাকেন। কিন্তু অল্প কয়েকজন ছাড়া সবাই শিরক ও কুফরীর উপরই রয়ে যায়। এমন কি তারা তাকে কষ্ট দিতে থাকে। এবং তাঁকে কষ্ট দেয়ার ব্যাপারে একে অপরকে উত্তেজিত করে। মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি হযরত নূহকে (আঃ) সাহায্য করেছিলাম ঐ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যারা আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করেছিল এবং তাকে তাদের উৎপীড়ন হতে রক্ষা করেছিলাম এবং তার প্রার্থনা অনুযায়ী ভূ-পৃষ্ঠে একজন কাফিরও পরিত্রাণ পায় নাই। সবকেই ডুবিয়ে দেয়া হয়।
সতর্কবার্তা
কুরআনের কো্নো অনুবাদ ১০০% নির্ভুল হতে পারে না এবং এটি কুরআন পাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এখানে বাংলা ভাষায় অনূদিত প্রায় ৮ জন অনুবাদকের অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা তাদের নির্ভুলতার গ্যারান্টি দিতে পারি না।