আল কুরআন


সূরা আল-আম্বিয়া (আয়াত: 39)

সূরা আল-আম্বিয়া (আয়াত: 39)



হরকত ছাড়া:

لو يعلم الذين كفروا حين لا يكفون عن وجوههم النار ولا عن ظهورهم ولا هم ينصرون ﴿٣٩﴾




হরকত সহ:

لَوْ یَعْلَمُ الَّذِیْنَ کَفَرُوْا حِیْنَ لَا یَکُفُّوْنَ عَنْ وُّجُوْهِهِمُ النَّارَ وَ لَا عَنْ ظُهُوْرِهِمْ وَ لَا هُمْ یُنْصَرُوْنَ ﴿۳۹﴾




উচ্চারণ: লাও ইয়া‘লামুল্লাযীনা কাফারূহীনা লা-ইয়াকুফফূনা ‘আওঁউজুহিহিমুন্না-রা ওয়ালা-‘আন জু হূরিহিম ওয়ালা-হুম ইউনসারূন।




আল বায়ান: হায়, কাফিররা যদি সে সময়ের কথা জানত, যখন তারা তাদের সামনে ও পেছন থেকে আগুন ফিরাতে পারবে না। আর তাদেরকে সাহায্যও করা হবে না;




আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া: ৩৯. যদি কাফেররা সে সময়ের কথা জানত, যখন তারা তাদের চেহারা ও পিঠ থেকে আগুন প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং তাদেরকে সাহায্য করাও হবে না। (তাহলে তারা সে শাস্তিকে তাড়াতাড়ি চাইত না।)




তাইসীরুল ক্বুরআন: অবিশ্বাসীরা যদি (সে সময়ের কথা) জানত যখন তারা তাদের মুখ হতে অগ্নি প্রতিরোধ করতে পারবে না, আর তাদের পিঠ থেকেও না, আর তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।




আহসানুল বায়ান: (৩৯) যদি অবিশ্বাসীরা সেই সময়ের কথা জানত, যখন তারা তাদের সম্মুখ ও পশ্চাৎ হতে অগ্নি প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং তাদেরকে সাহায্য করাও হবে না (তাহলে তারা এ কথা বলত না)। [1]



মুজিবুর রহমান: হায়! যদি কাফিরেরা সেই সময়ের কথা জানতো যখন তারা তাদের সম্মুখ ও পশ্চাত হতে আগুন প্রতিরোধ করতে পারবেনা এবং তাদেরকে সাহায্য করাও হবেনা।



ফযলুর রহমান: কাফেররা যদি সেই সময়ের কথা জানত, যখন তারা তাদের মুখমণ্ডল ও পৃষ্ঠদেশ থেকে আগুন প্রতিহত করতে পারবে না এবং তারা কোন সাহায্যও পাবে না!



মুহিউদ্দিন খান: যদি কাফেররা ঐ সময়টি জানত, যখন তারা তাদের সম্মুখ ও পৃষ্ঠদেশ থেকে অগ্নি প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং তারা সাহায্য প্রাপ্ত হবে না।



জহুরুল হক: যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা যদি জানত সেই সময়ের কথা যখন তারা আগুন সরিয়ে দিতে পারবে না তাদের মুখের থেকে, আর তাদের পিঠের থেকেও না, আর তাদের সাহায্যও করা হবে না।



Sahih International: If those who disbelieved but knew the time when they will not avert the Fire from their faces or from their backs and they will not be aided...



তাফসীরে যাকারিয়া

অনুবাদ: ৩৯. যদি কাফেররা সে সময়ের কথা জানত, যখন তারা তাদের চেহারা ও পিঠ থেকে আগুন প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং তাদেরকে সাহায্য করাও হবে না। (তাহলে তারা সে শাস্তিকে তাড়াতাড়ি চাইত না।)


তাফসীর:

-


তাফসীরে আহসানুল বায়ান

অনুবাদ: (৩৯) যদি অবিশ্বাসীরা সেই সময়ের কথা জানত, যখন তারা তাদের সম্মুখ ও পশ্চাৎ হতে অগ্নি প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং তাদেরকে সাহায্য করাও হবে না (তাহলে তারা এ কথা বলত না)। [1]


তাফসীর:

[1] এখানে এর উত্তর ঊহ্য আছে। অর্থাৎ যদি এরা জানত, তাহলে আযাবের জন্য তাড়াতাড়ি করত না অথবা তারা নিশ্চিতরূপে জানত যে, কিয়ামত আসবে অথবা কুফরীর উপর অটল থাকত না বরং ঈমান আনয়ন করত।


তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ


তাফসীর: ৩৮-৪০ নং আয়াতের তাফসীর:



কাফিরদেরকে যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করতেন তখন তারা উপহাস করে বলত: এ শাস্তি কখন আসবে? তাদের এ কথার উত্তরে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তারা যদি এ শাস্তি সম্পর্কে অবগত থাকত তাহলে এ ব্যাপারে তারা তাড়াহুড়া করত না। সেদিন তারা কোন সাহায্যকারী পাবে না, যে তাদেরকে এ শাস্তি থেকে রক্ষা করবে। আর এ শাস্তি অতর্কিতভাবে আসবে। তখন তাদেরকে আর অবকাশ দেয়া হবে না। সেখানে সর্বদিক থেকে তারা আগুনের শাস্তি ভোগ করবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:



(لَهُمْ مِّنْ فَوْقِهِمْ ظُلَلٌ مِّنَ النَّارِ وَمِنْ تَحْتِهِمْ ظُلَلٌ)



“তাদের জন্য তাদের ওপর দিক থেকে ঘিরে ধরবে আগুনের শিখা এবং তাদের নীচের দিক থেকেও ঘিরে ধরবে আগুনের শিখা।” (সূরা যুমার ৩৯:৪)

আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:



(لَهُمْ مِّنْ جَهَنَّمَ مِهَادٌ وَّمِنْ فَوْقِهِمْ غَوَاشٍ)



“তাদের শয্যা হবে জাহান্নামের এবং তাদের ওপরে আচ্ছাদনও।” (সূরা আ‘রাফ ৭:৪১)



সুতরাং বুঝা গেল যে, জাহান্নামের শাস্তি বড়ই যন্ত্রণায়ক। এ শাস্তি থেকে পরিত্রাণের কোনই পথ নেই একনিষ্ঠ ঈমান ও আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যে কৃত সৎ আমল ব্যতীত। তাই আমাদের সচেতন হওয়া দরকার। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের তাওফীক দিন। আমীন!



আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:



১. শাস্তির ব্যাপারে তাড়াহুড়া করা যাবে না।

২. জাহান্নামে জাহান্নামীরা সর্বদিক থেকে আগুনের শাস্তি ভোগ করবে।

৩. শাস্তি এসে গেলে কাউকে অবকাশ দেয়া হবে না।


তাফসীরে ইবনে কাসীর (তাহক্বীক ছাড়া)


তাফসীর: ৩৮-৪০ নং আয়াতের তাফসীর:

মুশরিকদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেন যে, তারা কিয়ামত সংঘটিত হওয়াকে অসত্ব মনে করতে বলে আম্পর্ধা দেখিয়ে বলতোঃ “তুমি আমাদেরকে যা থেকে ভয় প্রদর্শন করছে তা কখন সংঘটিত হবে এবং এই প্রতিশ্রুতি কখন পূর্ণ হবে? মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তাদেরকে জবাব দিচ্ছেনঃ তোমরা যদি বিবেকবান হতে এবং ঐ দিনের ভয়াবহ অবস্থা সম্পর্কে সতর্ক থাকতে তবে কখনো এর জন্যে তাড়াহুড়া করতে না! ঐ সময় শাস্তি তোমাদেরকে তোমাদের উপর হতে ও তোমাদের পায়ের নীচে হতে আচ্ছন্ন করে ফেলবে। তখন তোমরা তোমাদের সম্মুখ ও পশ্চাৎ হতে ঐ শাস্তিকে প্রতিরোধ করতে পারবে না। ঐ দিন তোমরা গন্ধকের পোশাক পরিহিত থাকবে এবং ঐ অবস্থায় তোমাদের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হবে। তোমাদেরকে চতুর্দিক হতে জাহান্নাম পরিবেষ্টন করে ফেলবে। কেউই তোমাদেরকে সাহায্য করার জন্যে এগিয়ে আসবে না।

ঐ শাস্তি তাদের উপর অতর্কিতভাবে এসে পড়বে এবং তাদেরকে হতভম্ব ও হতবুদ্ধি করে দিবে। ফলে তারা তা রোধ করতে পারবে না এবং তাদেরকে মোটেই অবকাশও দেয়া হবে না।





সতর্কবার্তা
কুরআনের কো্নো অনুবাদ ১০০% নির্ভুল হতে পারে না এবং এটি কুরআন পাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এখানে বাংলা ভাষায় অনূদিত প্রায় ৮ জন অনুবাদকের অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা তাদের নির্ভুলতার গ্যারান্টি দিতে পারি না।