আল কুরআন


সূরা আল-কাহফ (আয়াত: 5)

সূরা আল-কাহফ (আয়াত: 5)



হরকত ছাড়া:

ما لهم به من علم ولا لآبائهم كبرت كلمة تخرج من أفواههم إن يقولون إلا كذبا ﴿٥﴾




হরকত সহ:

مَا لَهُمْ بِهٖ مِنْ عِلْمٍ وَّ لَا لِاٰبَآئِهِمْ ؕ کَبُرَتْ کَلِمَۃً تَخْرُجُ مِنْ اَفْوَاهِهِمْ ؕ اِنْ یَّقُوْلُوْنَ اِلَّا کَذِبًا ﴿۵﴾




উচ্চারণ: মা-লাহুম বিহী মিন ‘ইলমিওঁ ওয়ালা-লিআ-বাইহিম কাবুরাত কালিমাতান তাখরুজু মিন আফওয়া-হিহিম ইয়ঁইয়াকূলূনা ইল্লা-কাযিবা-।




আল বায়ান: এ ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও না। বড় মারাত্মক কথা, যা তাদের মুখ থেকে বের হয়। মিথ্যা ছাড়া তারা কিছুই বলে না!




আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া: ৫. এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও ছিল না। তাদের মুখ থেকে বের হওয়া বাক্য কী সাংঘাতিক! তারা তো শুধু মিথ্যাই বলে।(১)




তাইসীরুল ক্বুরআন: এ সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই, আর তাদের পিতৃ-পুরুষদেরও ছিল না। তাদের মুখ থেকে বের হয় বড়ই সাংঘাতিক কথা। তারা যা বলে তা মিথ্যে ছাড়া কিছুই নয়।




আহসানুল বায়ান: (৫) এই বিষয়ে তাদের কোনই জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও ছিল না; তাদের মুখনিঃসৃত বাক্য[1] কি সাংঘাতিক! তারা তো শুধু মিথ্যাই বলে।



মুজিবুর রহমান: এ বিষয়ে তাদের কোনই জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও ছিলনা; তাদের মুখ-নিঃসৃত বাক্য কি উদ্ভট! তারাতো শুধু মিথ্যাই বলে।



ফযলুর রহমান: এ ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞান নেই, তাদের বাপ-দাদাদেরও ছিল না। তাদের মুখ থেকে যে কথা বের হয় তা কী সাংঘাতিক! তারা শুধু মিথ্যাই বলে।



মুহিউদ্দিন খান: এ সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও নেই। কত কঠিন তাদের মুখের কথা। তারা যা বলে তা তো সবই মিথ্যা।



জহুরুল হক: তাদের এ বিষয়ে কোনো জ্ঞান নেই আর তাদের পিতৃপুরুষদেরও ছিল না। এ এক সাংঘাতিক কথা যা তাদের মুখ থেকে নির্গত হয়। তারা যা বলে তা মিথ্যা বৈ তো নয়।



Sahih International: They have no knowledge of it, nor had their fathers. Grave is the word that comes out of their mouths; they speak not except a lie.



তাফসীরে যাকারিয়া

অনুবাদ: ৫. এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও ছিল না। তাদের মুখ থেকে বের হওয়া বাক্য কী সাংঘাতিক! তারা তো শুধু মিথ্যাই বলে।(১)


তাফসীর:

(১) অৰ্থাৎ তাদের এ উক্তি যে, অমুক আল্লাহর পুত্র অথবা অমুককে আল্লাহ পুত্র হিসেবে গ্ৰহণ করেছেন, এগুলো তারা এ জন্য বলছে না যে, তাদের আল্লাহর পুত্র হবার বা আল্লাহর কাউকে পুত্র বানিয়ে নেবার ব্যাপারে তারা কিছু জানে। বরং নিছক নিজেদের ভক্তি শ্রদ্ধার বাড়াবাড়ির কারণে তারা একটি মনগড়া মত দিয়েছে এবং এভাবে তারা যে কত মারাত্মক গোমরাহীর কথা বলছে এবং বিশ্বজাহানের মালিক ও প্ৰভু আল্লাহর বিরুদ্ধে যে কত বড় বেয়াদবী ও মিথ্যাচার করে যাচ্ছে তার কোন অনুভূতিই তাদের নেই। এভাবে তারা নিজেরা যেমন পথভ্রষ্ট হচ্ছে তেমনি ভ্ৰষ্ট করছে তাদের সন্তান-সন্ততিদেরকেও। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর]


তাফসীরে আহসানুল বায়ান

অনুবাদ: (৫) এই বিষয়ে তাদের কোনই জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও ছিল না; তাদের মুখনিঃসৃত বাক্য[1] কি সাংঘাতিক! তারা তো শুধু মিথ্যাই বলে।


তাফসীর:

[1] সেই ‘বাক্য’ এই যে, আল্লাহর সন্তান-সন্ততি আছে। যা একেবারে মনগড়া মিথ্যা।


তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ


তাফসীর: নামকরণ:



الْكَهْف শব্দের অর্থ গুহা, অত্র সূরাতে বাণী-ইসরাঈলের গুহাবাসিন্দা তথা “আসহাবুল কাহ্ফ” সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ফলে একে “সূরাতুল কাহ্ফ” নামে নামকরণ করা হয়েছে।



ফযীলত:



সূরা কাহ্ফ তেলাওয়াত করলে বাড়িতে শান্তি ও বরকত নাযিল হয়। একজন সাহাবী এই সূরাটি পাঠ করতে শুরু করেন। তাঁর বাড়িতে একটি জন্তু ছিল, তা লাফাতে শুরু করে। সাহাবী গভীরভাবে দৃষ্টিপাত করে সামিয়ানার মত এক খণ্ড মেঘ দেখতে পান যা তাঁর ওপর ছায়া করেছে। তিনি এটা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন: তুমি এটা পাঠ করতে থাকতে। এটা হল আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে ঐ ‘সাকীনা’ বা প্রশান্তি যা কুরআন পাঠের সময় অবতীর্ণ হয়ে থাকে। (সহীহ মুসলিম হা: ১৮৯৩)



এ সূরার প্রথম ও শেষ দশ আয়াতের ফযীলতের ব্যাপারে হাদীসগুলো এভাবে বর্ণিত হয়েছে: যে ব্যক্তি সূরা কাহ্ফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্ত করবে, সে ব্যক্তি দাজ্জালের ফিৎনা থেকে সুরক্ষিত থাকবে। (নাসাঈ হা: ৮০২৪, তিরমিযী হা: ২৮৮৬, সহীহ) সহীহ মুসলিমে শেষ দশটি আয়াত মুখস্তের এ ফযীলত বর্ণনা এসেছে (হাদীস নং ৮০৯)। যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরা কাহ্ফ পড়বে, তার জন্য আগামী জুমআহ পর্যন্ত একটি বিশেষ জ্যোতি আলোকিত হয়ে থাকবে। (সহীহুল জামে হা: ৬৪৭০)



শানে নুযূল:



কুরাইশরা নাযার ইবনু হারিস ও ‘উকবা বিন মুঈতকে মদীনার ইয়াহূদী আলেমদের নিকট পাঠিয়ে দেয় এবং তাদেরকে বলে: তোমরা তাদের কাছে গিয়ে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অবস্থা সম্পর্কে তুলে ধরবে। কারণ ইয়াহূদী আলেমদের কাছে পূর্ববর্তী নাবীদের সম্পর্কে জ্ঞান ছিল, তাই তারা সত্য মিথ্যা বলতে পারবে। সুতরাং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে তাদের মতামত কী তা তাদেরকে জিজ্ঞেস করবে। এই দু’জন তখন মদীনার ইয়াহূদী আলেমদের সাথে সাক্ষাৎ করে এবং তাদের সামনে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অবস্থা সম্পর্কে সব কিছু তুলে ধরে, তারা এদেরকে বলে: দেখ আমরা তোমাদেরকে একটা মীমাংসার কথা বলছি। তোমরা ফিরে গিয়ে মুহাম্মাদকে তিনটি প্রশ্ন করবে। যদি তিনি উত্তর দিতে পারেন, তবে তিনি সত্য নাবী এতে কোন সন্দেহ নেই। আর যদি উত্তর দিতে না পারেন, তবে তাঁর মিথ্যাবাদী হওয়া সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই। তখন তোমরা তাঁর ব্যাপারে যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে। তোমরা তাঁকে জিজ্ঞেস করবে: (এক) পূর্বযুগে যে যুবকরা বেরিয়ে গিয়েছিল তাদের ঘটনা কী? কেননা এটা অত্যন্ত বিস্ময়কর ঘটনা। (দুই) তাঁকে ঐ ব্যক্তির অবস্থা জিজ্ঞেস করবে যিনি সমস্ত পৃথিবী ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি পূর্ব প্রান্ত হতে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে এসেছিলেন। (তিন) তাঁকে তোমরা রূহের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে। যদি তিনি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারেন, তবে তোমরা তাকে নাবী বলে স্বীকার করে নিয়ে তাঁর অনুসরণ করবে। আর যদি উত্তর দিতে না পারেন তবে জানবে যে, তিনি মিথ্যাবাদী। সুতরাং যা ইচ্ছা তা-ই করবে। এরা দু’জন মক্কায় ফিরে গিয়ে কুরাইশদেরকে বলে: “শেষ ফায়সালার কথা ইয়াহূদী আলেমগণ বলে দিয়েছেন। সুতরাং চল আমরা তাকে প্রশ্নগুলি করি। অতঃপর তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আগমন করে এবং তাঁকে ঐ তিনটি প্রশ্ন করে। তিনি তাদেরকে বললেন: তোমরা আগামী দিন এস, আমি তোমাদের এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেব। কিন্তু তিনি ‘ইন্শা-আল্লাহ’ বলতে ভুলে যান। এরপর পনের দিন অতিবাহিত হয়ে যায়, কিন্তু তাঁর কাছে না কোন ওয়াহী আসে, না আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে তাঁকে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানিয়ে দেয়া হয়। এর ফলে মক্কাবাসী ক্ষুব্ধ হয় এবং পরস্পর বলাবলি করে: দেখ কালকের ওয়াদা ছিল আর আজ পনের দিন কেটে গেল, তবুও সে জবাব দিতে পারল না। এতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দ্বিগুণ দুঃখে জর্জরিত হতে লাগলেন। একদিকে কুরাইশদেরকে জবাব দিতে না পারায় তাদের কথা শুনতে হচ্ছে। অন্যদিকে: ওয়াহী আসা বন্ধ হয়েছে। এরপর জিবরীল (عليه السلام) আগমন করেন এবং সূরা কাহ্ফ অবতীর্ণ হয়। এতেই ইনশা-আল্লাহ তা‘আলা না বলায় তাঁকে ধমকানো হয়, ঐ যুবকদের ঘটনা বর্ণনা করা হয়, ঐ ভ্রমণকারীর বর্ণনা দেয়া হয় এবং রূহের ব্যাপারে জবাব দেয়া হয়। (তাফসীর ত্ববারী ১৫/১২৭-১২৮, ইবুন কাসীর খ. ৫/পৃ. ১৪২)



সূরা কাহফ একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা, সূরাতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সান্ত্বনা প্রদান, তারপর আসহাবে কাহফ-এর বর্ণনা, অতঃপর দুটি বাগানের মালিকের দৃষ্টান্ত, তারপর দুনিয়ার উপমা এবং সবশেষে যুলকারনাইন ও ইয়া’জূজ-মা’জূজের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে।



১-৫ নং আয়াতের তাফসীর:



সূরা শুরু করলেন আল্লাহ তা‘আলা নিজের প্রশংসা করার মাধ্যমে। আল্লাহ তা‘আলা যে কোন বিষয় শুরু বা শেষ করার ক্ষেত্রে নিজের প্রশংসা করেন। মূলত এর মাধ্যমে বান্দাদেরকে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে যে, কোন ভাল কাজের শুরু-শেষসহ সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা করতে হয়। এ সূরাটি হল সে পাঁচটি সূরার অন্তর্ভুক্ত (সূরা ফাতিহা, আন‘আম, সাবা ও ফাতির) যে পাঁচটি সূরা ‘আল হামদুলিল্লাহ’ দ্বারা শুরু করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি কিতাব তথা কুরআন নাযিল করে যেমন ভাল কাজ করেছেন তেমনি তা দ্বারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-সহ সকল মানুষকে অনুগ্রহ করেছেন। সুতরাং তিনি প্রশংসার পাত্র।



এখানে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ তা‘আলা عَبْدِ বা দাস বললেন, যেমন সূরা বানী ইসরাঈলে বলেছেন। সুতরাং আল্লাহ তা‘আলার আবদ বা দাস হওয়া একটি মহৎ ও বড় গুণ।



عِوَجًا শব্দের অর্থ বক্রতা, ত্র“টি। অর্থাৎ শাব্দিক ও আর্থিক কোন দ্ব্যর্থতা নেই, পূর্ববর্তীদের সকল সংবাদ সত্য, বিধি-বিধানগুলো ত্র“টি-বিচ্যুতি থেকে মুক্ত। হালাল-হারাম, ভাল-মন্দ, কি কাজ করলে জান্নাতে যাওয়া যাবে এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচা যাবে, কোন্টি হিদায়াতের পথ কোন্টি ভ্রষ্টতার পথ ইত্যাদি প্রতিটি দিক যথাযথভাবে তুলে ধরেছেন।



আল্লাহ তা‘আলার বাণী:



(قُرْاٰنًا عَرَبِيًّا غَيْرَ ذِيْ عِوَجٍ لَّعَلَّهُمْ يَتَّقُوْنَ)‏



“এ কুরআন আরবি ভাষায়, এতে বিন্দুমাত্রও বক্রতা নেই, যাতে তারা সাবধানতা অবলম্বন করে।” (সূরা যুমার ৩৯:২৮)



مستقيما لاميل فيه ولازيغ - قَيِّمًا



অর্থাৎ এ কুরআন সুপ্রতিষ্ঠিত, কোন বক্রতা ও বিচ্যুতি নেই, এটি সঠিক পথ প্রদর্শন করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:



(إِنَّ هٰذَا الْقُرْاٰنَ يَهْدِيْ لِلَّتِيْ هِيَ أَقْوَمُ)



“নিশ্চয়ই এ কুরআন দিশ দান করে সে পথের দিকে যা সুদৃঢ়।” (সূরা ইসরা ১৭:৯)



সুতরাং যারা কাফির-মুশরিক তাদেরকে এ কুরআন কঠিন শাস্তির ভীতি প্রদর্শন করে, আর সৎকর্মপরায়ণ মু’মিন-মুত্তাকিদেরকে উত্তম পুরস্কারের সুসংবাদ দিয়ে থাকে। এটা হল কুরআনের অন্যতম একটি মূলনীতি যেখানে কাফিরদের কথা উল্লেখ থাকবে সেখানে মু’মিনদের কথাও উল্লেখ থাকবে, যেখানে জাহান্নামের বর্ণনা থাকবে সেখানে জান্নাতের কথাও থাকবে এবং যেখানে ভীতি প্রদর্শন থাকবে সেখানে সুসংবাদও থাকবে।



(بَأْسًا شَدِيْدًا)



‘কঠিন শাস্তি’ এতে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতের শাস্তি শামিল। (أَجْرًا حَسَنًا) এতে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি ও জান্নাত লাভসহ সকল সফলতা অন্তর্ভুক্ত। তাই পরের আয়াতে বলা হয়েছে তারা সেখানে তথা জান্নাতে সর্বদা থাকবে সেখান থেকে কখনো বের করে দেয়া হবে না।



এবং এতে আরো সতর্ক করা হয়েছে ঐ সমস্ত লোকদেরকে, যারা কোন প্রকার দলীল-প্রমাণ ছাড়াই বলে যে, আল্লাহ তা‘আলার সন্তান রয়েছে। এটা আল্লাহ তা‘আলার সাথে অংশী স্থাপন করে তাঁর ওপর অপবাদ দেয়া। যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার ওপর এরূপ অপবাদ দেয়, আল্লাহ তা‘আলা তার এ গুনাহ ক্ষমা করবেন না। এর জন্য কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। কারণ আল্লাহ তা‘আলা সর্বপ্রকার শরীক (স্ত্রী, পুত্র, ওয়ালী ইত্যাদি) গ্রহণ করা থেকে মুক্ত। যেরূপ সূরা ইসরার শেষ আয়াতে বলা হয়েছে। যে ব্যক্তি জেনে শুনে আল্লাহ তা‘আলার সাথে এই ধরনের শরীক স্থাপন করবে তার জন্য জান্নাত হারাম হয়ে যাবে এবং সে চিরকাল জাহান্নামে অবস্থান করবে।



আল্লাহ তা‘আলার বাণী:



(إِنَّه۫ مَنْ يُّشْرِكْ بِاللّٰهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللّٰهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوٰهُ النَّارُ ط وَمَا لِلظّٰلِمِيْنَ مِنْ أَنْصَارٍ) ‏



“কেউ আল্লাহর সাথে শরীক করলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত অবশ্যই হারাম করবেন এবং তার আবাস জাহান্নাম। জালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।” (সূরা মায়িদাহ ৫:৭২)



মূলত যারা আল্লাহ তা‘আলার সাথে শির্ক করে তাদের এ ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান নেই, যদি সঠিক জ্ঞান থাকত তাহলে কখনো শির্ক করত না। কারণ আল্লাহ তা‘আলা কোথাও শির্ক করার নির্দেশ দেন নাই এবং শির্ক করার নির্দেশ দিয়ে কোন কিতাব ও রাসূল প্রেরণ করেননি এবং তারা যে তাদের বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে বলে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে এরূপ শির্ক করতে পেয়েছি, তাদের বাপ-দাদাদেরও সঠিক জ্ঞান ছিল না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:



(وَإِذَا قِيْلَ لَهُمْ تَعَالَوْا إِلٰي مَآ أَنْزَلَ اللّٰهُ وَإِلَي الرَّسُوْلِ قَالُوْا حَسْبُنَا مَا وَجَدْنَا عَلَيْهِ اٰبَا۬ءَنَا ط أَوَلَوْ كَانَ اٰبَآؤُهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ شَيْئًا وَّلَا يَهْتَدُوْنَ)‏ ‏



“যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তার দিকে ও রাসূলের দিকে আস, তারা বলে, ‘আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যাতে পেয়েছি তাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ যদিও তাদের পূর্বপুরুষগণ কিছুই জানত না এবং সৎপথ প্রাপ্তও ছিল না, (তবুও কি তাদের অনুসরণ করবে?)।” (সূরা মায়িদা ৫:১০৪)



অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার পুত্র রয়েছে তাদের এ কথা কতইনা জঘণ্য কথা। এ কথা সূরা ইসরার ৪০ নং আয়াতেও বলা হয়েছে। তাদের এসব কথা শুনে আকাশ ভেঙ্গে জমিন ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে যায়।



সুতরাং আল্লাহ তা‘আলার সাথে শির্ক হয় এমন সকল প্রকার কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা শির্ক সবচেয়ে বড় জুলুম। আর যারা শির্ক করে তারা সবচেয়ে বড় জালিম।



আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:



১. সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা করা উচিত, কেননা তাঁর অনুগ্রহ ব্যতীত এক মুহূর্ত চলা সম্ভব নয়।

২. কুরআন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সঠিক পথের দিশারী, এতে কোন প্রকার বক্রতা নেই।

৩. আল্লাহ তা‘আলার কোন শরীক নেই, তিনি একক ও অদ্বিতীয়।

৪. কোন অন্যায় কাজে বড়দের অনুসরণ করা যাবে না।

৫. আল্লাহ তা‘আলার বান্দা হওয়া অনেক মর্যাদার বিষয়।


তাফসীরে ইবনে কাসীর (তাহক্বীক ছাড়া)


তাফসীর: সূরার ফজীলত বিশেষ করে প্রথম দশটি আয়াতের ফজীলতের বর্ণনা এবং সূরাটি যে দাজ্জালের ফিৎনা হতে রক্ষাকারী তার বর্ণনা।

মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, একজন সাহাবী এই সূরাটি পাঠ করতে শুরু করেন। তাঁর বাড়ীতে একটি জন্তু ছিল, সে লাফাতে শুরু করে। সাহাবী গভীরভাবে দৃষ্টিপাত করে সামিয়ানার মত এক খণ্ড মেঘ দেখতে পান যা তাঁর উপর ছায়া করে রয়েছে। তিনি এটা রাসূলুল্লাহর (সঃ) কাছে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বলেনঃ “তুমি এটা পাঠ করতে থাকো। এটা হচ্ছে আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে ঐ ‘সাকীনা' যা কুরআন পাঠের সময় অবতীর্ণ হয়ে থাকে। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমেও এই রিওয়াইয়াতটি রয়েছে। এই সাহাবী ছিলেন হযরত উসায়েদ ইবনু হুযায়ের (রাঃ), যেমন সূরায়ে বাকারার তাফসীরে আমরা বর্ণনা করেছি।

মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি সূরায়ে কাহফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ, করে তাকে দাজ্জালের ফিত্রা হতে রক্ষা করা হয়; জামে তিরমিযীতে তিনটি আয়াতের বর্ণনা রয়েছে। সহীহ মুসলিমে শেষ দশটি আয়াতের বর্ণনা আছে। সুনানে নাসায়ীতে সাধারণভাবে দশটি আয়াতের বর্ণনা রয়েছে।

মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি সূরায়ে কাহফের প্রথম ও শেষ আয়াত পাঠ করে, তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত নূর হবে। আর যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ সূরাটি পড়বে সে যমীন হতে আসমান পর্যন্ত নূর লাভ করবে। একটি গারীব বা দুর্বল সনদে ইবনু মীরদুওয়াই (রঃ) বর্ণনা করেছেন যে, জুমআর দিন যে ব্যক্তি সূরায়ে কাহফ পাঠ করবে সে তার পায়ের নীচ থেকে নিয়ে আকাশের উচ্চতা পর্যন্ত নূর লাভ করবে। ওটা কিয়ামতের দিন খুবই উজ্জ্বল হবে এবং পরবর্তী জুমআ পর্যন্ত তার সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। এই হাদীসের মর’ হওয়ার ব্যাপারে চিন্তা ভাবনার অবকাশ রয়েছে। এর মাওকুফ হওয়টাই সঠিক কথা।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরায়ে কাহফ পাঠ করে তার পার্শ্ব থেকে নিয়ে বায়তুল্লাহ পর্যন্ত আলোকিত হয়ে যায়।

মুসতাদরিকে হাকিমে মারফু রূপে বর্ণিত আছে যে, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরায়ে কাহফ পড়ে তার জন্যে দুই জুমআর মধ্যবর্তী সময় আলোকিত হয়ে থাকে।

ইমাম বায়হাকীর (রঃ) হাদীস গ্রন্থে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি সূরায়ে কাফকে ঐ ভাবে পড়বে যেভাবে তা নাযিল হয়েছে, তার জন্যে কিয়ামতের দিন জ্যোতি হয়ে যাবে।

হাফিয যিআ' মুকাদ্দাসীর (রঃ) কিতাবুল মুখতারা’ গ্রন্থে আছে যে, যেই ব্যক্তি জুমআর দিন সূরায়ে কাহফ পাঠ করবে সে আট দিন পর্যন্ত সমস্ত ফিৎনা ফাসাদ হতে নিরপিত্তা লাভ করবে। এমন কি যদি এই সময়ের মধ্যে দাজ্জালও এসে পড়ে তবে তারও ফিন্যা হতে তাকে রক্ষা করা হবে।

১-৫ নং আয়াতের তাফসীর:

আমরা পূর্বেই এটা বর্ণনা করে দিয়েছি যে, আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক বিষয়ের শুরুতে ও শেষে তার প্রশংসা করে থাকেন। সর্বাবস্থাতেই তিনি তা’রীফ ও প্রশংসার যোগ্য। প্রথমে ও শেষে প্রশংসার যোগ্য একমাত্র তিনিই। তিনি স্বীয় নবীর (সঃ) উপর কুরআন কারীম অবতীর্ণ করেছেন যা তার একটি বড় নিয়ামত। এর মাধ্যমে আল্লাহর সমস্ত বান্দা অন্ধকার হতে। বেরিয়ে আলোকের দিকে আসতে পারে। এই কিতাবকে তিনি ঠিকঠাক, সোজা ও সঠিক রেখেছেন। এতে কোনই বক্রতা নেই এবং নেই কোন ত্রুটি। এটা যে সরল ও সঠিক পথ প্রদর্শন করে এটা স্পষ্ট, পরিষ্কার ও প্রকাশমান। এই কিতাব অসৎ লোকদেরকে ভয় প্রদর্শন করে এবং সৎলোকদেরকে শুভসংবাদ দেয়। এটা বিরুদ্ধাচরণকারী ও প্রত্যাখ্যানকারীদেরকে ভয়াবহ শাস্তির খবর দেয়, যে শাস্তি আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে। দুনিয়াতেও হবে এবং আখেরাতেও হবে। এমন শাস্তি যা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ দিতে পারে না। যারা এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করবে, ঈমান আনবে এবং আমল করবে, এই কিতাব তাদেরকে মহাপুরস্কারের সুসংবাদ শুনাচ্ছে। যে পুরস্কার হলো চিরস্থায়ী ও অবিনশ্বর, যা তারা জান্নাতে প্রাপ্ত হবে, যা কখনো ধ্বংস হবে না এবং যার নিয়ামতরাশি চিরকাল থাকবে।

এই কিতাব ঐ লোকদেরকে ভীষণ শাস্তি হতে সর্তক করছে যারা বলছে যে, আল্লাহর সন্তান রয়েছে। যেমন মক্কার মুশরিকরা বলতো যে, ফেরেশতারা আল্লাহর কন্যা (নাউযু বিল্লাহি মিন্যালিকা)। না জেনে শুনেই তারা মুখ দিয়ে একথা বলে ফেলতো। তারা তো দূরের কথা, তাদের বড়রাও এরূপ কথা বলতে থেকেছে।

(আরবী) শব্দের উপর যবর দেয়া হিসেবে (আরবী)। বাকপদ্ধতির গঠন হবে (আরবী) এইরূপ। আবার একথাও বলা হয়েছে যে, শব্দের দেয়া হয়েছে হিসেবে। তখন ইবারতের গঠন হবে (আরবী) এইরূপ। যেমন বলা হয় (আরবী) অর্থাৎ যায়েদ মানুষ হিসেবে কতই না সম্মানিত। বসরাবাসী কারো কারো উক্তি এই যে, কোন কোন কারী এটাকে (আরবী) পড়েছেন। যেমন-বলা হয় (আরবী) অর্থাৎ তোমার কথা বিরাট হয়েছে এবং তোমার শান শওকত বড় হয়েছে। জমহুরের কিরআতে তো অর্থ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশমান যে, তাদের কথা যে খুবই মন্দ ও জঘন্য, তারই এখানে বর্ণনা দেয়া হয়েছে, যা মিথ্যা ও অপবাদ ছাড়া কিছুই নয়। এজন্যেই বলা হয়েছে। যে, তারা শুধু মিথ্যা বলে।

এই সূরার শানে নুযূল এই যে, কুরায়েশরা নাযার ইবনু হারিস ও উকবা’ ইবনু মুঈতকে মদীনার ইয়াহুদী আলেমদের নিকট পাঠিয়ে দেয় এবং তাদেরকে বলেঃ “তোমরা তাদের কাছে গিয়ে তাদের সামনে মুহাম্মদের (সঃ) সমস্ত অবস্থা বর্ণনা করবে। পূর্ববর্তী নবীদের সম্পর্কে তাদের জ্ঞান রয়েছে। সুতরাং মুহাম্মদ (সঃ) সম্পর্কে তাদের মতামত কি তা তাদেরকে জিজ্ঞেস করবে।” এই দু’জন তখন মদীনার ইয়াহূদী আলেমদের সাথে সাক্ষাৎ করে এবং তাদের সামনে হযরত মুহাম্মদের (সঃ) অবস্থা ও গুণাবলী বর্ণনা করে, তারা এদেরকে বলেঃ “দেখো, আমরা তোমাদেরকে একটা মীমাংসাযুক্ত কথা বলছি। তোমরা ফিরে গিয়ে তাঁকে তিনটি প্রশ্ন করবে। যদি তিনি উত্তর দিতে পারেন, তবে তিনি যে সত্য নবী এতে কোন সন্দেহ নেই। আর যদি উত্তর দিতে না পারেন, তবে তার মিথ্যাবাদী হওয়া সম্পর্কে কোন সন্দেহ থাকবে না। তখন তোমরা তার ব্যাপারে যা ইচ্ছা করতে পার।” তোমরা তাকে জিজ্ঞেস করবেঃ “পূর্বযুগে যে যুবকগণ বেরিয়ে গিয়েছিলেন তাদের ঘটনা বর্ণনা করুন তো? এটা একটা বিস্ময়কর ঘটনা তারপর তাকে ঐ ব্যক্তির অবস্থা জিজ্ঞেস করবে যিনি সমস্ত পৃথিবী ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি পূর্ব প্রান্ত হতে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে এসেছিলেন। আর তাকে তোমরা রূহের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে। যদি তিনি এই প্রশ্নগুলির উত্তর দিতে পারেন, তবে তোমরা তাকে নবী বলে স্বীকার করে নিয়ে তার অনুসরণ করবে। আর যদি উত্তর দিতে না পারেন তবে জানবে যে, তিনি মিথ্যাবাদী। সুতরাং যা ইচ্ছা তা-ই করবে।` এরা দু’জন মক্কায় ফিরে গিয়ে কুরায়েশদেরকে বলেঃ

“শেষ ফায়সালার কথা ইয়াহূদী আলেমগণ বলে দিয়েছেন। সুতরাং চল আমরা তাকে প্রশ্নগুলি করি।” অতঃপর তারা রাসূলুল্লাহর (সঃ) কাছে আগমন করে এবং তাঁকে ঐ তিনটি প্রশ্ন করে। তিনি তাদেরকে বলেনঃ “তোমরা আগামী কাল এসো, আমি তোমাদের এই প্রশ্নগুলির উত্তর দিবো।” কিন্তু তিনি ইনশা আল্লাহ (আল্লাহ চান তো) বলতে ভুলে যান। এরপর পনেরো। দিন অতিবাহিত হয়ে যায়, কিন্তু তাঁর কাছে না কোন ওয়াহী আসে, না আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তাঁকে এই প্রশ্নগুলির জবাব জানিয়ে দেয়া হয়। এর ফলে মক্কাবাসী ফুলে ওঠে এবং পরস্পর বলাবলি করেঃ “দেখো, কালকার ওয়াদা ছিল, আর আজ পনেরো দিন কেটে গেল, তবুও সে জবাব। দিতে পারলো না।` এতে রাসূলুল্লাহ (সঃ) দ্বিগুণ দুঃখে জর্জরিত হতে লাগলেন। একতো কুরায়েশদেরকে জবাব দিতে না পারায় তাদের কথা শুনতে হচ্ছে, দ্বিতীয়তঃ ওয়াহী আসা বন্ধ হয়েছে। এরপর হযরত জিবরাঈল (আঃ) আগমন করেন এবং সূরায়ে কাহফ অবতীর্ণ হয়। এতেই ইনশা আল্লাহ না বলায় তাঁকে ধমকানো হয়, ঐ যুবকদের ঘটনা বর্ণনা করা হয়, ঐ ভ্রমণকারীর বর্ণনা দেয়া হয় এবং রূহের ব্যাপারে জবাব দেয়া হয়।





সতর্কবার্তা
কুরআনের কো্নো অনুবাদ ১০০% নির্ভুল হতে পারে না এবং এটি কুরআন পাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এখানে বাংলা ভাষায় অনূদিত প্রায় ৮ জন অনুবাদকের অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা তাদের নির্ভুলতার গ্যারান্টি দিতে পারি না।