আল কুরআন


সূরা আল-মুরসালাত (আয়াত: 19)

সূরা আল-মুরসালাত (আয়াত: 19)



হরকত ছাড়া:

ويل يومئذ للمكذبين ﴿١٩﴾




হরকত সহ:

وَیْلٌ یَّوْمَئِذٍ لِّلْمُکَذِّبِیْنَ ﴿۱۹﴾




উচ্চারণ: ওয়াইলুইঁ ইয়াওমাইযিল লিলমুকাযযিবীন।




আল বায়ান: মিথ্যারোপকারীদের জন্য সেদিনের ধ্বংস!




আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া: ১৯. সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যারোপকারীদের জন্য।




তাইসীরুল ক্বুরআন: সে দিন দুর্ভোগ সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের জন্য।




আহসানুল বায়ান: (১৯) সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যাজ্ঞানকারীদের জন্য।



মুজিবুর রহমান: সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য।



ফযলুর রহমান: সেদিন (কেয়ামতের দিন) অবিশ্বাসীদের জন্য বড় দুর্ভোগ রয়েছে।



মুহিউদ্দিন খান: সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।



জহুরুল হক: ধিক সেইদিন সত্যপ্রত্যাখ্যানকারীদের প্রতি!



Sahih International: Woe, that Day, to the deniers.



তাফসীরে যাকারিয়া

অনুবাদ: ১৯. সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যারোপকারীদের জন্য।


তাফসীর:

-


তাফসীরে আহসানুল বায়ান

অনুবাদ: (১৯) সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যাজ্ঞানকারীদের জন্য।


তাফসীর:

-


তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ


তাফসীর: ১৬-২৮ নম্বর আয়াতের তাফসীর :



এ আয়াতগুলোতে পূর্ববর্তী অবাধ্য জাতির ধ্বংসের কথা ও মানুষের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার কয়েকটি নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে মানুষ সতর্ক হয়ে অবাধ্য কাজ বর্জন করে আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্য করে জীবন যাপন করে।



(أَلَمْ نُهْلِكِ الْأَوَّلِيْنَ)



অর্থাৎ পূর্ববর্তী জাতিদের মধ্য হতে যারা নাবীদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল আমি তাদেরকে ধ্বংস করেছি। আর তাদের সদৃশ যারা আসবে তাদেরকেও ধ্বংস করব। এটাই আমার নীতি। সুতরাং যারা আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করবে তাদের সাবধান হওয়া উচিত।



(مَّا۬ءٍ مَّهِيْنٍ) অর্থাৎ তুচ্ছ বা নগণ্য পানি যা পুরুষের পৃষ্ঠদেশ আর নারীর বক্ষদেশ থেকে আল্লাহ তা‘আলা বের করেন, তারপর তা (قَرَارٍ مَّكِيْنٍ) বা মায়ের জরায়ুতে স্থাপন করেন।



(إِلٰي قَدَرٍ مَّعْلُوْمٍ)



অর্থাৎ মায়ের জরায়ুতে এ পানি নির্দিষ্ট দিন পর্যন্ত স্থাপন করে রাখেন, আর তা হল ছয়মাস থেকে নয় মাস বা তারও বেশি। (ইবনু কাসীর)



كِفَاتًا অর্থাৎ জমিনকে সৃষ্টি করেছেন ধারণকারীরূপে। জীবিতদের জন্য জমিন তার ওপরে ধারণ করে আর মৃতদেরকে কবরে ধারণ করে।



رَوَاسِيَ শব্দটি رَاسِيَة এর বহুবচন। অর্থ সুদৃঢ় পাহাড়, شامخات অর্থ সুউচ্চ।



(مَّا۬ءً فُرَاتًا) অর্থ : মিষ্টি সুপেয় পানি, যা আকাশ থেকে নাযিল করেন অথবা জমিনে তার উৎস সৃষ্টি করে দিয়েছেন।



আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :



১. যুগে যুগে যারা নাবীদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে ধ্বংস করেছেন এবং কিয়ামত পর্যন্ত এ রীতি বিদ্যমান থাকবে।

২. আকাশ-জমিনের মাঝে যা কিছু আছে সবই আল্লাহ তা‘আলা মানুষের উপকারার্থে সৃষ্টি করেছেন।


তাফসীরে ইবনে কাসীর (তাহক্বীক ছাড়া)


তাফসীর: ১৬-২৮ নং আয়াতের তাফসীর

আল্লাহ তা'আলা কাফিরদেরকে লক্ষ্য করে বলেনঃ তোমাদের পূর্বেও যারা আমার রাসূলদের রিসালাতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল তাদেরকে আমি তচনচ করেছি। তাদের পরে অন্যেরা এসেছিল এবং তারাও অনুরূপ কাজ করেছিল, ফলে তাদেরকেও আমি ধ্বংস করে দিয়েছি। আমি অপরাধীদের প্রতি এরূপই করে থাকি। কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসকারীদের কি দুর্গতিই না হবে!

অতঃপর স্বীয় মাখলূককে মহান আল্লাহ নিজের অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন এবং কিয়ামত অস্বীকারকারীদের সামনে দলীল পেশ করছেন যে, তিনি তাদেরকে তুচ্ছ পানি (শুক্র) হতে সৃষ্টি করেছেন যা বিশ্ব সৃষ্টিকর্তার সামনে ছিল অতি নগণ্য জিনিস। যেমন সূরা ইয়াসীনের তাফসীরে হযরত বিশর ইবনে জাহহাশ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে রয়েছেঃ “হে আদম সন্তান! তুমি আমাকে অপারগ করতে পারবে? অথচ আমি তোমাকে এরূপ (তুচ্ছ ও নগণ্য) জিনিস দিয়ে সৃষ্টি করেছি!”

মহান আল্লাহ বলেনঃ অতঃপর আমি ওটাকে স্থাপন করেছি নিরাপদ আধারে। অর্থাৎ ঐ পানিকে আমি রেহেমে জমা করেছি যা ঐ পানির জমা হওয়ার জায়গা। ওটাকে আমি এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছি ও নিরাপদে রেখেছি। অর্থাৎ ছয় মাস বা নয় মাস। আমি এটাকে গঠন করেছি পরিমিতভাবে, কত নিপুণ স্রষ্টা আমি! এরপরেও যদি ঐ দিনকে বিশ্বাস না কর তবে বিশ্বাস রেখো যে, কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে বড়ই আফসোস ও দুঃখ করতে হবে।

এরপর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেনঃ আমি যমীনের উপর কি এই খিদমত অৰ্পণ করিনি যে, সে তোমাদের জীবিতাবস্থায় তোমাদেরকে স্বীয় পৃষ্ঠে বহন করছে এবং তোমাদের মৃত্যুর পরেও তোমাদেরকে নিজের পেটের মধ্যে লুকিয়ে রাখছে? তারপর যমীন যেন হেলা-দোলা করতে না পারে তজ্জন্যে আমি ওতে সুউচ্চ পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তোমাদেরকে দিয়েছি মেঘ হতে বর্ষিত পানি এবং ঝরণা হতে প্রবাহিত সুপেয় পানি। এসব নিয়ামত প্রাপ্তির পরেও যদি তোমরা আমার কথাকে অবিশ্বাস কর তবে জেনে রেখো যে, এমন এক সময় আসছে যখন তোমরা দুঃখ ও আফসোস করবে, কিন্তু তখন তা কোনই কাজে আসবে না!





সতর্কবার্তা
কুরআনের কো্নো অনুবাদ ১০০% নির্ভুল হতে পারে না এবং এটি কুরআন পাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এখানে বাংলা ভাষায় অনূদিত প্রায় ৮ জন অনুবাদকের অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা তাদের নির্ভুলতার গ্যারান্টি দিতে পারি না।