সূরা আল-মায়েদা (আয়াত: 7)
হরকত ছাড়া:
واذكروا نعمة الله عليكم وميثاقه الذي واثقكم به إذ قلتم سمعنا وأطعنا واتقوا الله إن الله عليم بذات الصدور ﴿٧﴾
হরকত সহ:
وَ اذْکُرُوْا نِعْمَۃَ اللّٰهِ عَلَیْکُمْ وَ مِیْثَاقَهُ الَّذِیْ وَاثَقَکُمْ بِهٖۤ ۙ اِذْ قُلْتُمْ سَمِعْنَا وَ اَطَعْنَا ۫ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِیْمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوْرِ ﴿۷﴾
উচ্চারণ: ওয়াযকুরূ নি‘মাতাল্লা-হি ‘আলাইকুম ওয়া মীছা-কাহুল্লাযী ওয়াছাকাকুম বিহী ইযকুলতুম ছামি‘না-ওয়া আতা‘না ওয়াত্তাকুল্লাহা ইন্নাল্লা-হা ‘আলীমুম বিযাতিসসুদূ র।
আল বায়ান: আর স্মরণ কর, তোমাদের উপর আল্লাহর নিআমত এবং তাঁর অঙ্গীকার, যা তিনি তোমাদের থেকে নিয়েছেন। যখন তোমরা বললে, ‘আমরা শুনেছি এবং আনুগত্য করেছি’ আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ অন্তরের বিষয় সম্পর্কে বিশেষ অবগত।
আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া: ৭. আর স্মরণ কর, তোমাদের উপর আল্লাহর নেয়ামত এবং যে অঙ্গীকারে তিনি তোমাদেরকে আবদ্ধ করেছিলেন তা; যখন তোমরা বলেছিলে, ‘শুনলাম এবং মেনে নিলাম’(১)। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর; নিশ্চয় আল্লাহ অন্তরে যা আছে সে সম্পর্কে সবিশেষ অবগত।
তাইসীরুল ক্বুরআন: তোমাদের প্রতি আল্লাহর নিআমতের কথা স্মরণ কর আর তাঁর অঙ্গীকারের কথা যা তিনি তোমাদের নিকট থেকে গ্রহণ করেছিলেন যখন তোমরা বলেছিলে- আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম। আল্লাহকে ভয় কর, অন্তরে যা আছে সে সম্পর্কে আল্লাহ খুব ভালভাবেই অবগত আছেন।
আহসানুল বায়ান: (৭) তোমাদের প্রতি আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ কর এবং সেই অঙ্গীকারকেও তোমরা স্মরণ কর, যার দ্বারা তিনি তোমাদেরকে আবদ্ধ করেছিলেন, যখন তোমরা বলেছিলে, ‘শ্রবণ করলাম ও মান্য করলাম।’ আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ অন্তরে যা আছে, সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।
মুজিবুর রহমান: আর তোমরা তোমাদের প্রতি বর্ষিত আল্লাহর অনুগ্রহকে স্মরণ কর এবং তাঁর ঐ অঙ্গীকারকেও স্মরণ কর, যে অঙ্গীকার তিনি তোমাদের নিকট থেকে গ্রহণ করেছিলেন। তোমরা বলেছিলে, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই তিনি অন্তরের কথাগুলিরও পূর্ণ খবর রাখেন।
ফযলুর রহমান: তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও তোমাদের কাছ থেকে নেওয়া তাঁর অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করো, যখন তোমরা বলেছিলে, “আমরা শুনেছি ও মেনে নিয়েছি”, আর আল্লাহকে ভয় করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ অন্তরের বিষয় সম্যক অবগত।
মুহিউদ্দিন খান: তোমরা আল্লাহর নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং ঐ অঙ্গীকারকেও যা তোমাদের কাছ থেকে নিয়েছেন, যখন তোমরা বলেছিলেঃ আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ অন্তরের বিষয় সম্পর্কে পুরোপুরি খবর রাখেন।
জহুরুল হক: আর স্মরণ করো তোমাদের উপরে আল্লাহ্র নিয়ামত আর তাঁর অঙ্গীকার যার দ্বারা তিনি তোমাদের অঙ্গীকারবদ্ধ করেছিলেন, যখন তোমরা বলেছিলে -- "আমরা শুনেছি আর আমরা আজ্ঞাপালন করছি।" আর আল্লাহ্কে ভয়-ভক্তি করো। নিঃসন্দেহ বুকের ভিতরে যা আছে আল্লাহ্ সে-সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।
Sahih International: And remember the favor of Allah upon you and His covenant with which He bound you when you said, "We hear and we obey"; and fear Allah. Indeed, Allah is Knowing of that within the breasts.
তাফসীরে যাকারিয়া
অনুবাদ: ৭. আর স্মরণ কর, তোমাদের উপর আল্লাহর নেয়ামত এবং যে অঙ্গীকারে তিনি তোমাদেরকে আবদ্ধ করেছিলেন তা; যখন তোমরা বলেছিলে, ‘শুনলাম এবং মেনে নিলাম’(১)। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর; নিশ্চয় আল্লাহ অন্তরে যা আছে সে সম্পর্কে সবিশেষ অবগত।
তাফসীর:
(১) সত্যনিষ্ঠ মুফাসসিরদের মতে, এখানে কোন মুখ দিয়ে বের হওয়া অঙ্গীকার উদ্দেশ্য নয়। বরং ঈমান আনার সাথে সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদেশ-নিষেধ পালনের যে অঙ্গীকার স্বতঃই এসে যায়, তা-ই উদ্দেশ্য। [ইবন কাসীর, সা’দী, মুয়াসসার]
তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অনুবাদ: (৭) তোমাদের প্রতি আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ কর এবং সেই অঙ্গীকারকেও তোমরা স্মরণ কর, যার দ্বারা তিনি তোমাদেরকে আবদ্ধ করেছিলেন, যখন তোমরা বলেছিলে, ‘শ্রবণ করলাম ও মান্য করলাম।’ আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ অন্তরে যা আছে, সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।
তাফসীর:
-
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ
তাফসীর: ৬-৭ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
৫ম অথবা ৬ষ্ঠ হিজরীতে অনুষ্ঠিত গাযওয়াতুল মুরাইসি বা বানী মুসতালিক যুদ্ধে আয়িশাহ (রাঃ) এর গলার হার হারানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উক্ত আয়াত নাযিল হয়।
আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমরা মদীনায় প্রবেশ করার উপক্রম ছিলাম তখন আমার গলার হারটি বায়দা নামক স্থানে পড়ে যায়। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় বাহন বসালেন এবং নামলেন। পরে আমার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যান। ইত্যবসরে আবূ বাকর (রাঃ) আমার কাছে এসে আমাকে শক্তভাবে আঘাত করলেন এবং বললেন: একটি হারের কারণে মানুষকে আটকে রেখেছ? তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সজাগ হলেন এবং ফজরের সালাতের সময় হল; কিন্তু পানি খুঁজে পাওয়া গেল না। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হল। সাহাবী উসাইদ বিন হুযাইর (রাঃ) বললেন: হে আবূ বাকরের পরিবার! আল্লাহ তা‘আলা মানুষের জন্য তোমাদেরকে কল্যাণময় বানিয়েছেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩৩৪)
অত্র আয়াতে সালাত কবুল হবার পূর্বশর্ত ওযূর পদ্ধতি এবং ওযূর পানির অনুপস্থিতিতে তায়াম্মুমের বিধান ও পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াতে ওযূর ছয়টি ফরয উল্লেখ করা হয়েছে:
১. সমস্ত মুখমণ্ডল ধৌত করা। ২. উভয় হাত কুনই পর্যন্ত ধৌত করা। ৩. সম্পূর্ণ মাথা মাসেহ করা। ৪. উভয় পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধৌত করা।
এছাড়াও দুটি ফরয রয়েছে; ৫. ধারাবাহিকতা রক্ষা করা এবং ৬. একটি অঙ্গ ধৌত করার পর দ্বিতীয় অঙ্গ ধৌত করতে দেরি না করা এবং এক অঙ্গ শুকিয়ে যাওয়ার পূর্বে অন্য অঙ্গ ধৌত করা।
এসব হল ওযূর ফরয। অসংখ্য সহীহ হাদীসে ওযূর পদ্ধতি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত।
(اِذَا قُمْتُمْ اِلَی الصَّلٰوةِ)
‘যখন তোমরা সালাতে দাড়াঁনোর ইচ্ছা করবে’ অর্থাৎ যখন সালাতে দাঁড়ানোর ইচ্ছা করবে তখন ওযূবিহীন থাকলে ওযূ কর। কেননা ওযূ ছাড়া সালাত কবূল হবে না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
لَا يَقْبَلُ اللَّهُ صَلَاةَ أَحَدِكُمْ إِذَا أَحْدَثَ حَتَّي يَتَوَضَّأَ
তোমাদের কারো ওযূ নষ্ট হয়ে গেলে ওযূ না করা পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা তার সালাত কবূল করবেন না। (সহীহ বুখারী হা: ৬৯৫৪) ওযূ করার সময় অবশ্যই ভালভাবে খেয়াল করতে হবে যে, ভালভাবে ওযূ হচ্ছে কি- না, প্রত্যেক অঙ্গ যথাযথভাবে ধৌত করা হচ্ছে কি- না। কারণ যারা ভালভাবে ওযূ করে না তাদের ধমক দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
وَيْلٌ لِلْأَعْقَابِ مِنْ النَّارِ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا
যারা ওযূ করার সময় ভালভাবে পায়ের গোড়ালী ধৌত করে না তাদের জন্য জাহান্নাম, এ কথাটি দুই অথবা তিনবার বললেন। (সহীহ বুখারী হা: ৬০)
এখান থেকে বুঝা যাচ্ছে এবং অধিকাংশ আলেম সমাজ বলেন, ওযূ করার সময় নিয়ত করা আবশ্যক। কারণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন
إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ
প্রত্যেক আমল (সঠিক হওয়া না হওয়া) নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। (সহীহ বুখারী হা: ০১)
(فَاغْسِلُوْا وُجُوْھَکُمْ)
‘তোমাদের চেহারা ধৌত কর’। চেহারার সীমারেখা হল- কপালের যেখান থেকে মাথার চুল শুরু হয়েছে সেখান থেকে দাড়ি গজানোর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত। আর প্রশস্ততায় এক কান হতে অন্য কান পর্যন্ত। চেহারা ধৌত করার সময় দাড়ি ধৌত ও খিলাল করা কর্তব্য তা যতই লম্বা হোক না কেন।
(وَاَیْدِیَکُمْ اِلَی الْمَرَافِقِ)
‘হাত কনুই পর্যন্ত ধুবে’ অর্থাৎ কনুইসহ উভয় হাত ধৌত করা ফরয। আরো বেশি ধৌত করা মুস্তাহাব। হাদীসে এসেছে: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: কিয়ামতের দিন আমার উম্মতকে তাদের ওযূর অঙ্গের শুভ্রতা দেখে ডাকা হবে। সুতরাং তোমাদের যে কেউ তার শুভ্রতা বৃদ্ধি করতে চায় সে যেন তা করে। (সহীহ বুখারী হা: ১৩৬)
(وَامْسَحُوْا بِرُؤُوْسِكُمْ)
‘তোমাদের মাথা মাসেহ কর’ এখানে মাথা সম্পূর্ণ মাসাহ করতে বলা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওযূর পদ্ধতির যে বিবরণ পাওয়া যায় তাতে সম্পূর্ণ মাথা মাসেহ করার কথা রয়েছে। “তারপর দু’হাত ভিজিয়ে মাথা মাসাহ করতেন। এ মাসাহের সময় তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাতের তালুসহ আঙ্গুল ভিজিয়ে নিয়ে উভয় হাত কপালের পার্শ্বে রেখে মাথার ওপর দিয়ে পিছনের দিকে চুলের শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতেন। আবার পিছন হতে উভয় হাত টেনে ঐ স্থানে পৌঁছাতেন যেখান হতে আরম্ভ করেছিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ১৮৫) সুতরাং মাথার এক-চতুর্থাংশ মাসাহ করা সঠিক নয়, বরং সুন্নাতী নিয়ম হল পূর্ণ মাথা মাসাহ করা।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জন করার নির্দেশ দিচ্ছেন।
(وَاِنْ کُنْتُمْ جُنُبًا)
‘তোমরা যদি অপবিত্র থাক’অপবিত্রতা বলতে স্বপ্নদোষ বা স্ত্রী সহবাস ও মহিলাদের মাসিক ও নিফাসজনিত অপবিত্রতা।
এ জাতীয় অপবিত্রতা হলে অথবা মহিলাদের মাসিক বা নিফাস বন্ধ হয়ে গেলে তখনই গোসল করে পবিত্রতা অর্জন করা জরুরী। পানি না পাওয়া গেলে তায়াম্মুম করতে হবে। যেমনটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। (আইসারুত তাফাসীর, ১/৫০৫) কেউ যদি এমন অসুস্থ হয় যে, পানি ব্যবহার করলে ক্ষতি হবে অথবা সফরে থাকে এবং পানি না পায় বা প্রস্রাব পায়খানা থেকে আগমন করে অথবা স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক করে কিন্তু পানি না পায় তাহলে তায়াম্মুম করবে, এতে পবিত্র হয়ে যাবে। তায়াম্মুমের নিয়ম হল: বিসমিল্লাহ বলে উভয় হাত একবার পবিত্র মাটিতে মেরে মুখমণ্ডল ও উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত মাসেহ করবে। আম্মার ইবনু ইয়াসার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি একদা উমার (রাঃ)-কে বললেন: আপনার কি মনে আছে যে, আমি ও আপনি সফরে ছিলাম এবং উভয়েই অপবিত্র হয়েছিলাম। কিন্তু আপনি সালাত আদায় করলেন না। আমি মাটিতে গড়াগড়ি করলাম ও সালাত আদায় করলাম। তারপর আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ বিষয়ে জানালাম। তিনি বললেন: এটিই তোমার জন্য যথেষ্ট ছিল- এ কথা বলে তিনি তার দু’হাতের তালু মাটিতে মারলেন এবং ফুঁ দিয়ে ঝাড়লেন। তারপর মুখমণ্ডল ও হাতদ্বয় মাসাহ করলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩৩৮) এ সম্পর্কে সূরা নিসার ৪৩ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
(لٰمَسْتُمُ النِّسَا۬ئَ)
‘অথবা তোমরা স্ত্রীর সঙ্গে মিলন কর’ - لَمسٌ এর শাব্দিক অর্থ হল স্পর্শ করা। এখানে অর্থ হল স্ত্রীর সাথে দৈহিক মিলন করা। অর্থাৎ কেউ স্ত্রীর সাথে দৈহিক মিলন করার পর পানি না পেলে তায়াম্মুম করে নেবে, এতে সে পবিত্র হয়ে যাবে এবং সালাত আদায় করতে পারবে।
(مَا یُرِیْدُ اللہُ لِیَجْعَلَ عَلَیْکُمْ مِّنْ حَرَجٍ)
‘আল্লাহ তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না’অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা বিধি-বিধান দিয়ে মানুষের ওপর সঙ্কীর্ণতা সৃষ্টি করতে চান না বরং তিনি চান পবিত্র করতে ও তার নেয়ামতরাজি পূর্ণ করে দিতে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّيْنِ مِنْ حَرَجٍ)
“তিনি তোমাদের ওপর দীনের ব্যাপারে কোন সংর্কীণতা সৃষ্টি করেননি।”(সূরা হজ্জ ২২:৭৮)
হাদীসে এসেছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
إِنَّ الدِّينَ يُسْرٌ وَلَنْ يُشَادَّ الدِّينَ أَحَدٌ إِلَّا غَلَبَهُ
দীন সহজ, কেউ দীনের ব্যাপারে কঠোরতা করলে দীন তার ওপর জয়ী হবে। (সহীহ বুখারী হা: ৩৯)
হাদীসে আরো এসেছে: নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: একজন মুসলিম বান্দা যখন ওযূ করার সময় তার চেহারা ধৌত করে তখন তার চেহারা থেকে সমস্ত গুনাহ বের হয়ে যায় যা তার চোখ দ্বারা করেছে। যখন হাত ধৌত করে তখন হাত দ্বারা যত গুনাহ করেছে তা বের হয়ে যায়। যখন পা ধৌত করে তখন পা দ্বারা যত গুনাহ হয়েছে সব বের হয়ে যায়, এমনকি সে পাপ থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র হয়ে যায়। (সহীহ মুসলিম হা: ৬০০)
তারপর আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত নেয়ামতের ও তাঁর সাথে কৃত অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন: অঙ্গীকার গ্রহণ করার সময় বলেছ, আমরা শুনলাম ও মানলাম। অতএব অঙ্গীকার ভঙ্গ করাকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা অন্তরযামী।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. পবিত্রতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তা, ওযূর পদ্ধতি ও বিকল্প পদ্ধতি তায়াম্মুম সম্পর্কে জানতে পারলাম।
২. পানির অনুপস্থিতিতে বড় অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জনের বিকল্প পদ্ধতি হচ্ছে তায়াম্মুম।
৩. ওযূ ও তায়াম্মুমের ক্ষেত্রে নিয়ত করা আবশ্যক।
৪. ওযূর ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা আবশ্যক।
৫. বিনা পবিত্রতায় সালাত গ্রহণযোগ্য হবে না।
৬. ওযূ নষ্ট হয়ে গেলেই ওযূ করতে হবে এমন নয়, বরং সালাতের জন্য সালাতে দাঁড়ানোর পূর্বে ওযূ করতে হবে। তবে সর্বদা ওযূ অবস্থায় থাকতে পারলে উত্তম।
৭. ছোট ও বড় সকল অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জনে তায়াম্মুমের পদ্ধতি একটিই, তাহল- মুখমণ্ডল ও উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত মাসাহ করা।
৮. ওযূর ক্ষেত্রে সমস্ত মাথা মাসাহ করা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পদ্ধতি।
৯. আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা এবং কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করা ওয়াজিব।
১০. এসব বিধি বিধান দেয়ার হিকমত জানলাম, তাহল- আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামতকে পূর্ণ করে দেয়া ও অপবিত্রতার কলুষতা থেকে পবিত্র করা।
তাফসীরে ইবনে কাসীর (তাহক্বীক ছাড়া)
তাফসীর: ৭-১১ নং আয়াতের তাফসীর:
এ বিরাট ধর্ম এবং এ মহান রাসূল (সঃ)-কে পাঠিয়ে আল্লাহ তা'আলা এ উম্মতের উপর যে ইহসান করেছেন সেটাই তিনি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। আর সেই অঙ্গীকারের উপর দৃঢ় থাকার জন্যে তাদেরকে হিদায়াত করেছেন, যে অঙ্গীকার মুসলমানরা করেছিল, তারা আল্লাহর রাসূলের (সঃ) অনুগত হবে, তাঁকে সর্ব প্রকারের সাহায্য করবে, দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে, নিজেরা তা কবুল করবে এবং অপরের নিকটও তা পৌছিয়ে দেবে। ইসলাম গ্রহণের সময় প্রতিটি মুমিন স্বীয় বায়আতে উক্ত জিনিসগুলো স্বীকার করতো। সাহাবায়ে কিরাম নিম্নলিখিত ভাষায় বলেছিলেনঃ “আমরা আল্লাহর রাসূল (সঃ)-এর নিকট বায়আত গ্রহণ করছি যে, আমরা শুনতে থাকবো, মানতে থাকবো। আমাদের মনের চাহিদা হোক বা না-ই হোক অথবা অন্যদেরকে আমাদের উপর প্রাধান্য দেয়া হোক না কেন। কোন যোগ্য লোকের নিকট থেকে আমরা কোন কাজ ছিনিয়ে নেবো না।`
ইরশাদ হচ্ছে-তোমরা ঈমান আনছো না কেন? অথচ রাসূলুল্লাহ (সঃ) তোমাদেরকে তোমাদের প্রভুর উপর ঈমান আনার আহ্বান জানাচ্ছেন! আর তিনি তোমাদের নিকট অঙ্গীকারও নিয়েছেন, যদি তোমাদের বিশ্বাস হয়। এটাও বলা হয়েছে যে, এ আয়াতে ইয়াহদীদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হচ্ছে তাদেরকে বলা হচ্ছে- তোমরা তো রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর আনুগত্য স্বীকারের কথা দিয়েছো, এরপরেও তাঁকে মান্য না করার কি অর্থ হতে পারে? একথাও বলা হয়েছে যে, হযরত আদমের পৃষ্ঠ থেকে বের হবার পর আল্লাহ তা'আলা বানু আদমের নিকট থেকে যে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন- আমি কি তোমাদের প্রভু নই? সবাই স্বীকারোক্তি করেছিল-হা, আমরা এর উপর সাক্ষী থাকলাম। কিন্তু প্রথম উক্তিটিই বেশী প্রকাশমান। সুদ্দী (রঃ) ও হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে এটাই বর্ণিত আছে। ইমাম ইবনে জারীরও (রঃ) একে পছন্দনীয় বলেছেন। সর্বাবস্থায় মানুষের আল্লাহকে ভয় করা উচিত। তিনি অন্তরের ও বক্ষের গোপনীয় কথাও পূর্ণভাবে অবগত রয়েছেন।
ঘোষিত হচ্ছে-হে মুমনিগণ! লোকদেরকে দেখাবার জন্যে নয়, বরং আল্লাহর জন্যে সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক এবং ইনসাফের সাথে সঠিক সাক্ষী হয়ে যাও। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত নোমান ইবনে বাশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ আমার পিতা আমাকে একটি দান দিয়ে রেখেছিলেন। তখন আমার মা উমরাহ বিনতে রাওয়াহা (রাঃ) বলেনঃ “আমি এ পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হতে পারি না যে পর্যন্ত না রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে এর উপর সাক্ষী বানানো হয়।' এ কথা শুনে আমার পিতা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট হাযির হয়ে ঘটনাটি বর্ণনা করেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “তোমার অনান্য সন্তানদেরকেও কি এরূপ দান দিয়ে রেখেছো?” আমার পিতা উত্তরে বললেনঃ ‘না। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন বললেনঃ “আল্লাহকে ভয় কর এবং স্বীয় সন্তানদের মধ্যে ইনসাফ কায়েম কর। যাও, আমি কোন অত্যাচারের উপর সাক্ষী হতে পারি না। আমার পিতা তখন ঐ দান আমার নিকট হতে ফিরিয়ে নেন।
ইরশাদ হচ্ছে- কোন সম্পদায়ের শত্রুতা যেন তোমাদেরকে আদল ও ইনসাফের পথ থেকে সরিয়ে না দেয়। (এখানে কওম' দ্বারা ইয়াহূদকে বুঝানো হয়েছে। তারা নবী (সঃ)-কে হত্যা করার ইচ্ছা করেছিল। যেমন ইবনে জারীর (রঃ) বর্ণনা করেছেন। আর সুহাইলী বলেন যে, এখানে কওম’ দ্বারা গাওরাস ইবনে হারিস গাতফানীকে বুঝানো হয়েছে) বন্ধু হোক বা শত্রু হোক, তোমাদের ইনসাফের পক্ষ অবলম্বন করা উচিত। এটাই হচ্ছে তাকওয়ার অধিক নিকটবর্তী। এখানে (আরবী) ঐ (আরবী)-এর উপর (আরবী) করেছে যার দিকে (আরবী) টি ফিরেছে। এ নযীর কুরআন মাজীদে আরও রয়েছে। আরবদের কথাতেও এর ব্যবহার দেখা যায়। কুরআন কারীমের এক জায়গায় রয়েছে- (আরবী) অর্থাৎ তোমরা যদি কোন বাড়ীতে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা কর, “আর সে সময় তোমাদেরকে বলা হয়- ফিরে যাও, তাহলে তোমরা ফিরে যাবে, এটাই তোমাদের জন্যে অধিক পবিত্র থাকার কারণ হবে।”(২৪:২৮) সুতরাং এখানেও (আরবী) -এর (আরবী) -এর উল্লেখ করা হয়নি, কিন্তু (আরবী) এর (আরবী) বিদ্যমান রয়েছে। অর্থাৎ ফিরে যাওয়া। অনুরূপভাবে আয়াতেও এ (আরবী) অর্থাৎ “ইনসাফ করা বিদ্যমান রয়েছে। এটাও স্মরণীয় বিষয় যে, এখানে শব্দটি (আরবী) -এর রূপ। এটা এমন জায়গায় রয়েছে যে অন্যদিকে আর কিছুই নেই। যেমনঃ (আরবী) (২৫ ২৪)-এ আয়াতটিতে রয়েছে। আর যেমন এক মহিলার হযরত উমার (রাঃ)-কে (আরবী) -এ কথা বলা। এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের আমল সম্বন্ধে পূর্ণ ওয়াকিফহাল। তিনি ভাল ও মন্দের পূর্ণ প্রতিদান প্রদান করবেন। তিনি মুমিনদের পাপ ক্ষমা করে তাদেরকে মহান পুরস্কার অর্থাৎ জান্নাত দান করার অঙ্গীকার করেছেন। যদিও প্রকৃতপক্ষে তারা এ রহমত একমাত্র আল্লাহর অনুগ্রহের ফলেই লাভ করবে, কিন্তু এ রহমতের প্রতি মনোযোগ দেয়ার কারণ হবে তাদের আমল। অতএব, প্রকৃতপক্ষে সর্বপ্রকারের প্রশংসার যোগ্য একমাত্র আল্লাহ এবং সব কিছুই তারই অনুগ্রহ ও দয়া মাত্র। জ্ঞান ও ইনসাফের দাবী তো এটাই যে, মুমিন ও সৎ লোকদেরকে জান্নাত দেয়া হোক এবং কাফির ও মিথ্যা প্রতিপন্নকারীদেরকে জাহান্নামে প্রবিষ্ট করা হোক। সুতরাং হবেও তাই।
তারপর আল্লাহ পাক নিজের আর একটি নিয়ামতের কথা মুমিনদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যার বিস্তারিত বিবরণ নিম্নরূপঃ
হযরত জাবির (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, কোন এক সফরে নবী (সঃ) একটি মনযিলে অবতরণ করেন। জনগণ ছায়াযুক্ত বৃক্ষরাজির খোঁজে বিচ্ছিন্নভাবে এদিক ওদিক ঘোরাফেরা করছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্বীয় হাতিয়ার একটি গাছে লটকিয়ে রাখেন। এমন সময় এক বেদুঈন এসে তাঁর তরবারীখানা হাতে টেনে নিয়ে বলে, আপনাকে এখন আমার হাত থেকে কে বাঁচাতে পারে? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “মহামহিমান্বিত আল্লাহ (আমাকে বাঁচাবেন)।” সে দ্বিতীয়বার এ প্রশ্নই করলো। রাসূলুল্লাহ (সঃ) পুনরায় এ উত্তরই দিলেন। বেদুঈন তৃতীয়বার বললো, “আপনাকে আমা থেকে রক্ষা করবে কে?” তিনি উত্তরে বললেনঃ আল্লাহ। বর্ণনাকারী বলেন যে, এ কথা বলার সাথে সাথে বেদুঈনের হাত থেকে তরবারী পড়ে গেল। রাসূলুল্লাহ (সঃ) সাহাবীদেরকে ডাক দিলেন। তাঁরা এসে গেলে তিনি তাঁদের কাছে বেদুঈনের ঘটনাটি বর্ণনা করলেন। সে তখনও তার পার্শ্বে উপবিষ্ট ছিল। কিন্তু তিনি তার কোন প্রতিশোধ নিলেন না। কাতাদাহ (রঃ) বলেন যে, কতগুলো তোক প্রতারণা করে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে হত্যা করতে চেয়েছিল এবং তারাই ঐ বেদুঈনকে গুপ্তঘাতক হিসেবে তাঁর নিকট পাঠিয়েছিল। কিন্তু মহান আল্লাহ তাদের পরিকল্পনা এভাবে ব্যর্থ করে দেন। সহীহ হাদীস দ্বারা জানা যায় যে, ঐ বেদুঈনের নাম ছিল গাওরাস ইবনে হারিস। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সঃ) ও তাঁর সাহাবীদেরকে হত্য করার উদ্দেশ্যে খাদ্যে বিষ মিশিয়ে তাদেরকে দাওয়াত করে। কিন্তু মহান আল্লাহ এ সংবাদ রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে জানিয়ে দেন। সুতরাং তারা বেঁচে যান। একথাও বলা হয়েছে যে, কা'ব ইবনে আশরাফ এবং তার ইয়াহূদী সঙ্গীরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে কষ্ট দিতে চেয়েছিল। এটা ঐ সময়ের ঘটনা, যখন নবী (সঃ) আমেরী লোকদের দিয়াত গ্রহণের জন্যে তাদের নিকট গিয়েছিলেন। ঐ সময় দুষ্টেরা আমর ইবনে জাহাশ ইবনে কা'বকে উত্তেজিত করতঃ বলেছিল- “আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে নীচে দাঁড় করিয়ে রেখে আলোচনায় লিপ্ত করিয়ে রাখবো, এ সুযোগে তুমি উপর থেকে তার উপর পাথর ফেলে দিয়ে তাঁকে দুনিয়া হতে বিদায় করে দেবে।” কিন্তু মহান আল্লাহ স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে পথেই তাদের দুষ্টামির কথা জানিয়ে দেন। সুতরাং রাসূলুল্লাহ (সঃ) সাহাবীগণসহ সেখান হতে ফিরে আসেন। এ আয়াতে ঐ ঘটনারই উল্লেখ রয়েছে।
ইরশাদ হচ্ছে-মুমিনদের আল্লাহর উপর ভরসা করা উচিত। বিপদ আপদ থেকে রক্ষাকারী একমাত্র তিনিই। এরপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) মহান আল্লাহর নির্দেশক্রমে বানূ নাযীরের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী নিয়ে অগ্রসর হন। তাদের কিছু সংখ্যক লোককে হত্যা করেন এবং কতক লোককে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেন।
সতর্কবার্তা
কুরআনের কো্নো অনুবাদ ১০০% নির্ভুল হতে পারে না এবং এটি কুরআন পাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এখানে বাংলা ভাষায় অনূদিত প্রায় ৮ জন অনুবাদকের অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা তাদের নির্ভুলতার গ্যারান্টি দিতে পারি না।