আল কুরআন


সূরা আন-নাজম (আয়াত: 3)

সূরা আন-নাজম (আয়াত: 3)



হরকত ছাড়া:

وما ينطق عن الهوى ﴿٣﴾




হরকত সহ:

وَ مَا یَنْطِقُ عَنِ الْهَوٰی ؕ﴿۳﴾




উচ্চারণ: ওয়ামা-ইয়ানতিকু‘আনিল হাওয়া-।




আল বায়ান: আর সে মনগড়া কথা বলে না।




আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া: ৩. আর তিনি মনগড়া কথা বলেন না।(১)




তাইসীরুল ক্বুরআন: আর সে মনগড়া কথাও বলে না।




আহসানুল বায়ান: (৩) এবং সে মনগড়া কথাও বলে না।



মুজিবুর রহমান: এবং সে মনগড়া কথাও বলেনা।



ফযলুর রহমান: সে প্রবৃত্তির তাড়নায় (মনগড়া) কথাও বলে না।



মুহিউদ্দিন খান: এবং প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলেন না।



জহুরুল হক: আর তিনি ইচ্ছামত কোনো কথা বলেন না।



Sahih International: Nor does he speak from [his own] inclination.



তাফসীরে যাকারিয়া

অনুবাদ: ৩. আর তিনি মনগড়া কথা বলেন না।(১)


তাফসীর:

(১) অর্থাৎ সেসব কথা তার মনগড়া নয় কিংবা তার প্রবৃত্তির কামনা-বাসনা ঐ সবের উৎস নয়। তা আল্লাহর পক্ষ থেকে অহীর মাধ্যমে তার ওপর নাযিল করা হয়েছে এবং হচ্ছে। একইভাবে ইসলামের এ আন্দোলন, তাওহীদের এ শিক্ষা, আখেরাত, হাশর-নাশর এবং কাজকর্মের প্রতিদানের এ খবর মহাবিশ্ব ও মানুষ সম্পর্কে এসব সত্য ও তথ্য এবং পবিত্র জীবন যাপন করার জন্য যেসব নীতিমালা তিনি পেশা করছেন এসবও তার নিজের রচিত দর্শন নয়। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর]।


তাফসীরে আহসানুল বায়ান

অনুবাদ: (৩) এবং সে মনগড়া কথাও বলে না।


তাফসীর:

-


তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ


তাফসীর: নামকরণ ও প্রাসঙ্গিক কথা :



আন্ নাজ্ম শব্দের অর্থ তারকা, নক্ষত্র ইত্যাদি। অত্র সূরার শুরুতে ‘নাজ্ম’ শব্দটি উল্লেখ রয়েছে। এত্থেকেই এ নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে।



ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : সূরা আন্ নাজ্ম মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। তবে এ আয়াতটি ব্যতীত



(الَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ كَبَائِرَ الْإِثْمِ وَالْفَوَاحِشَ)



(সূরা নাজম ৫৩ : ৩২, ফাতহুল কাদীর, অত্র সূরার তাফসীর)



ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : তেলাওয়াতে সিজদাবিশিষ্ট সর্বপ্রথম অবতীর্ণ সূরা হল আন-নাজম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ সূরা তেলাওয়াত করে সিজদা দিলেন এবং সকল মানুষ সিজদ্ াদিল। তবে একজন লোক ব্যতীত, সে একমুষ্টি মাটি হাতে নিয়ে তাতে সিজদা দিলো। তারপর আমি তাকে দেখেছি সে কাফির অবস্থায় নিহত হয়েছে। সে হলো ‘উমাইয়াহ্ বিন খালফ। (সহীহ বুখারী হা. ১০৮০) ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূরা নাজম তেলাওয়াত করে সিজদা করলেন, সাথে মুসলিম, মুশরিক ও জিন-ইনসান সবাই সিজদা করল। (সহীহ বুখারী হা. ১০৭১)



জায়েদ বিন সাবেত (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট সূরা আন-নাজম পাঠ করলাম। কিন্তু তিনি সিজদা দিলেন না। (সহীহ বুখারী হা. ১০৭৩, সহীহ মুসলিম ১/৪০৬)



সূরার শুরুতে আল্লাহ তা‘আলা তারকার শপথ করে বলেছেন যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্যানুরাগী ও সত্যের অনুসারী, তিনি ওয়াহী ছাড়া নিজের থেকে কোন কথা বলেন না। তারপর জিবরীল (আঃ)-এর বৈশিষ্ট্য এবং ঊর্ধ্বাকাশে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে দেখেছেন তার বর্ণনা করা হয়েছে। অতঃপর মক্কার মুশরিকদেরকে তাদের তৈরি করা মা‘বূদ সম্পর্কে বলছেন যে, তাদের এসব মা‘বূদ তাদের বাপ-দাদাদের দেয়া নাম ছাড়া কিছুই না, তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা কোন ক্ষমতা দেননি। তারা এসব মা‘বূদের ইবাদত ধারণাপ্রসূত করে থাকে।



১-৪ নম্বর আয়াতের তাফসীর :



هَوٰي “অস্তমিত হয়” এ অংশটুকুর তাফসীর করতে মুফাস্সিরগণ কয়েকটি মত পেশ করেছেন : মুজাহিদ (রহঃ) বলেন : এ থেকে উদ্দেশ্য সেই তারকা যা ফজর হওয়ার সাথে সাথে অস্তমিত হয়। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-ও এ কথা বলেছেন। ইমাম ইবনু জারীর (রহঃ) এ মত পছন্দ করেছেন।



আল্লামা সা‘দী (রহঃ) এ মতকে সমর্থন করে বলেন : রাতের শেষে দিনের আগমনের সময় ঊর্ধ্ব দিগন্তে যে তারকা অস্তমিত হয় তাকেই বুঝানো হয়েছে। এটাই সঠিক কথা।



যহ্হাক (রহঃ) বলেন : যে তারকা উল্কাপিণ্ডস্বরূপ শয়তানকে নিক্ষেপ করা হয়।



এ সকল তারকার শপথ করে আল্লাহ তা‘আলা বলছেন : তোমাদের সাথী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পথভ্রষ্ট না এবং বিপদগামীও না। বরং সে সঠিক দীনের ওপর সুপ্রতিষ্ঠিত। অর্থাৎ নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্য সম্পর্কে অজ্ঞ ছিলেন না এবং সত্য হতে বিমুখও হননি। বরং তিনি সত্যানুরাগী ও সত্যের অনুসারী । যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন :



(فَاسْتَمْسِكْ بِالَّذِيْٓ أُوْحِيَ إِلَيْكَ ج إِنَّكَ عَلٰي صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ)



“সুতরাং তোমার প্রতি যা ওয়াহী করা হয়েছে তা দৃঢ়ভাবে অবলম্বন কর। নিশ্চয়ই তুমি সরল পথেই রয়েছ।” (সূরা যুখরুফ ৪৩ : ৪৩)



صَاحِبُكُمْ (তোমাদের সঙ্গী) বলে এখানে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বুঝানো হয়েছে। কারণ নবুওয়াতের পূর্বে তিনি চল্লিশ বছর পর্যন্ত তোমাদের সঙ্গে কাটিয়েছেন।



তাঁর দিবা-রাত্রির কার্যকলাপ ও আচার-আচরণ তোমাদের সামনে বিদ্যমান। তাঁর চরিত্র ও নৈতিকতা তোমাদের জানা ও চেনা। এখন চল্লিশ বছর পর যখন তিনি নবুওয়াতের দাবী করেছেন, তখন একটু ভেবে দেখো যে, তিনি কি মিথ্যাবাদী হতে পারেন? অতএব বাস্তব এটাই যে, তিনি পথভ্রষ্ট না এবং বিপদগামীও না। এমনকি দীনের ব্যাপারে তিনি কোন মনগড়া কথা বলেন না। তাঁর কাছে যা ওয়াহী করা হয় তিনি কেবল তা-ই বলেন।



তাই নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দীনের ব্যাপারে যত কথা বলেছেন সব কথাই ওয়াহী মারফত বলেছেন। তবে এ ওয়াহী মাতলু না বরং গাইরে মাতলু।



‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে যা শুনতাম তা লিখে নিতাম। অতঃপর কুরাইশরা আমাকে এ কাজ করতে নিষেধ করে বলল : তুমি তো রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে যা শুনছ তার সবই লিখে নিচ্ছ, অথচ তিনি তো একজন মানুষ। তিনি কখনো কখনো ক্রোধের বশবর্তী হয়ে কিছু বলে ফেলেন। আমি তখন লেখা হতে বিরত থাকলাম এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এটা উল্লেখ করলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন : তুমি আমার কথাগুলো লিখতে থাকো। আল্লাহ তা‘আলার শপথ! সত্য কথা ছাড়া আমার মুখ দিয়ে অন্য কোন কথা বের হয় না। (আবূ দাঊদ হা. ৩৬৪৬, সিলসিলা সহীহাহ্ হা. ১৫৩২)



আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : আমি সত্য ছাড়া কিছু বলি না। কতক সাহাবী বললেন : হে আল্লাহর রাসূল! আপনি যে আমাদের সাথে রসিকতা করেন? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : আমি সত্য ছাড়া কিছু বলি না। (তিরমিযী হা. ১৯৯০, হাসান সহীহ)



তাই কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ শরীয়তের মূল উৎস এবং একটি অপরটির পরিপূরক। সহীহ হাদীস ছাড়া কখনো শরীয়ত চলতে পারে না। যারা বলে- আমরা কুরআনে যা কিছু পেয়েছি তা-ই আমাদের জন্য যথেষ্ট; তারা পথভ্রষ্ট ছাড়া কিছুই নয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন :



أَلَا إِنِّي أُوتِيتُ الْقُرْآنَ وَمِثْلَهُ مَعَهُ



সাবধান! জেনে রেখ! আমি কুরআন ও অনুরূপ আরো পেয়েছি। (মুসনাদ আহমাদ হা. ১৭১৭, সহীহ)



(وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوٰي)



‘এবং সে প্রবৃত্তি হতেও কোন কথা বলে না’ এ আয়াত থেকে এটাও প্রমাণিত হয় যে, দীনের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইজতিহাদ করে কোন কথা বলতেন না। যা বলতেন ওয়াহীভিত্তিক বলতেন।



আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :



১. তেলাওয়াতের সিজদা ওয়াজিব নয়, তার প্রমাণ পেলাম।

২. নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে দীন নিয়ে এসেছেন তা সত্য, তাতে কোন প্রকার ভ্রষ্টতা নেই।

৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওয়াহী ছাড়া দীনী বিষয়ে কোন কথা বলেননি।


তাফসীরে ইবনে কাসীর (তাহক্বীক ছাড়া)


তাফসীর: সহীহ বুখারী শরীফে হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, সিজদা বিশিষ্ট সর্বপ্রথম যে সূরাটি অবতীর্ণ হয় তা হলো এই আন্ নাজম সূরা। নবী (সঃ) সিজদা করেন এবং তার পিছনে যত সাহাবী (রাঃ) ছিলেন সবাই সিজদা করেন। শুধু একটি লোক তার মুষ্টির মধ্যে মাটি নিয়ে ওরই উপর সিজদা করে। হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেনঃ “আমি দেখি যে, এরপর ঐ লোকটি কুফরীর অবস্থাতেই মারা যায়। ঐ লোকটি ছিল উমাইয়া ইবনে খালফ।” কিন্তু এতে জটিলতা রয়েছে। তা এই যে, অন্য রিওয়াইয়াতে ঐ লোকটি উৎবা ইবনে রাবীআ নামে বর্ণিত হয়েছে।

১-৪ নং আয়াতের তাফসীর:

হযরত শা'বী (রঃ) বলেন যে, সৃষ্টিকর্তা তার সৃষ্টবস্তুর যেটার ইচ্ছা সেটারই কসম খেতে পারেন, কিন্তু সৃষ্টজীব তার সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কারো কসম খেতে পারে না।” (এটা ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)

নক্ষত্রের অস্তমিত হওয়া দ্বারা ফজরের সময় সারিয়া তারকার অস্তমিত হওয়া বুঝানো হয়েছে। কারো কারো মতে এর দ্বারা যুহরা নামক তারকা উদ্দেশ্য। যহ্হাক (রঃ) বলেন যে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ওটা ঝরে গিয়ে শয়তানের দিকে ধাবিত হওয়া।

এ উক্তিটির ভাল ব্যাখ্যা হতে পারে। মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, এই বাক্যটির তাফসীর হলোঃ শপথ কুরআনের যখন তা অবতীর্ণ হয়। এই আয়াতটি হলো আল্লাহ তা'আলার নিম্নের উক্তিগুলোর মতইঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি শপথ করছি নক্ষত্ররাজির অস্তাচলের, অবশ্যই এটা এক মহা শপথ, যদি তোমরা জানতে। নিশ্চয়ই এটা সম্মানিত কুরআন, যা আছে সুরক্ষিত কিতাবে, যারা পূত পবিত্র তারা ব্যতীত অন্য কেউ তা স্পর্শ করে না। এটা জগত সমূহের প্রতিপালকের নিকট হতে অবতীর্ণ।” (৫৬:৭৫-৮০)

তারপর যে বিষয়ের উপর শপথ করেছেন তার বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, নবী (সঃ) পুণ্য, সততা ও হিদায়াতের উপর রয়েছেন। তিনি সত্যের অনুসারী। তিনি অজ্ঞতা বশতঃ কোন ভুল পথে পরিচালিত নন বা জেনে শুনে কোন বক্র পথের পথিক নন। পথভ্রষ্ট খৃষ্টান এবং জেনে শুনে সত্যের বিরুদ্ধাচরণকারী ইয়াহুদীদের মত চরিত্র তাঁর নয়। তাঁর জ্ঞান পরিপূর্ণ, ইলম অনুযায়ী তাঁর আমল, তাঁর পথ সোজা ও সরল, তিনি আযীমুশ্মান শরীয়তের আইন রচয়িতা এবং তিনি সত্য মধ্যম পথের উপর দণ্ডায়মান। তাঁর কোন কথা ও আদেশ তার প্রবৃত্তি ও ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে হয় না। বরং আল্লাহ তা'আলা তাঁকে যে বিষয়ের তাবলীগের হুকুম করেন তা-ই তিনি তার মুখ দিয়ে বের করেন। সেখান হতে যা কিছু বলা হয় সেটাই তার মুখে উচ্চারিত হয়। আল্লাহর কথা ও হুকুমের কম বেশী করা হতে তাঁর কালাম পবিত্র।

হযরত আবূ উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ “নবী নয় এই রূপ একজন লোকের শাফাআতের দ্বারা দু’টি গোত্র বা দু'টি গোত্রের মধ্যে একটি গোত্রের সংখ্যার সমান লোক জান্নাতে যাবে। গোত্র দুটি হলো রাবীআহ ও মুযার।” তাঁর একথা শুনে একটি লোক তাকে জিজ্ঞেস করলোঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! রাবীআহ কি মুযারের অন্তর্ভুক্ত নয়?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “আমি তো ওটাই বলছি যা আমি বলেছি।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) হতে যা শুনতাম তা লিখে নিতাম। অতঃপর কুরায়েশরা আমাকে এ কাজ করতে নিষেধ করে বললোঃ “তুমি তো রাসূলুল্লাহ (সঃ) হতে যা শুনছো তার সবই লিখে নিচ্ছ, অথচ তিনি তো একজন মানুষ। তিনি কখনো কখনো ক্রোধের বশবর্তী হয়ে কিছু বলে ফেলেন?” আমি তখন লিখা হতে বিরত থাকলাম এবং রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট এটা উল্লেখ করলাম। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন আমাকে বললেনঃ “তুমি আমার কথাগুলো লিখতে থাকো। আল্লাহর শপথ! সত্য কথা ছাড়া আমার মুখ দিয়ে অন্য কোন কথা বের হয় না।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ), ইমাম আবু দাঊদ (রঃ) এবং ইমাম ইবনে আবি শায়বা (রঃ) বর্ণনা করেছেন)

হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলার পক্ষ হতে আমি তোমাদেরকে যে খবর দিয়ে থাকি তাতে কোন সন্দেহ থাকতে পারে না।” (এ হাদীসটি হাফিয আবু বকর আল বাযযার (রঃ) বর্ণনা করেছেন)

হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমি সত্য ছাড়া কিছু বলি না।” তখন কোন একজন সাহাবী তাঁকে বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আপনি তো আমাদের সাথে রসিকতাও করে থাকেন?” উত্তরে তিনি বললেনঃ “তখনও আমি সত্য কথাই বলে থাকি (রসিকতার সময়েও আমার মুখ দিয়ে মিথ্যা কথা বের হয় না)।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)





সতর্কবার্তা
কুরআনের কো্নো অনুবাদ ১০০% নির্ভুল হতে পারে না এবং এটি কুরআন পাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এখানে বাংলা ভাষায় অনূদিত প্রায় ৮ জন অনুবাদকের অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা তাদের নির্ভুলতার গ্যারান্টি দিতে পারি না।