সূরা আন-নিসা (আয়াত: 13)
হরকত ছাড়া:
تلك حدود الله ومن يطع الله ورسوله يدخله جنات تجري من تحتها الأنهار خالدين فيها وذلك الفوز العظيم ﴿١٣﴾
হরকত সহ:
تِلْکَ حُدُوْدُ اللّٰهِ ؕ وَ مَنْ یُّطِعِ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ یُدْخِلْهُ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا ؕ وَ ذٰلِکَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ ﴿۱۳﴾
উচ্চারণ: তিলকা হুদূদুল্লা-হি ওয়া মাই ইউতি‘ইল্লা-হা ওয়ারাছূলাহু ইউদখিলহু জান্না-তিন তাজরী মিন তাহতিহাল আনহা-রু খা-লিদীনা ফীহা- ওয়া যা-লিকাল ফাওযুল ‘আজীম।
আল বায়ান: এগুলো আল্লাহর সীমারেখা। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে আল্লাহ তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে, যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর এটা মহা সফলতা ।
আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া: ১৩. এসব আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। কেউ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করলে আল্লাহ তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; তারা সেখানে স্থায়ী হবে আর এটাই হলো মহাসাফল্য।
তাইসীরুল ক্বুরআন: এসব আল্লাহর নির্ধারিত সীমা এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের অনুসরণ করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার পাদদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত, তারা তাতে চিরবাসী হবে এবং এটা বিরাট সাফল্য।
আহসানুল বায়ান: (১৩) এসব আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। আর যে আল্লাহ ও রসূলের অনুগত হয়ে চলবে আল্লাহ তাকে বেহেশ্তে স্থান দান করবেন; যার নীচে নদীসমূহ প্রবাহিত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে এবং এ মহা সাফল্য।
মুজিবুর রহমান: এটাই আল্লাহর নির্দিষ্ট সীমাসমূহ; এবং যে কেহ আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের অনুগত হয় তিনি তাকে এরূপ জান্নাতে প্রবিষ্ট করাবেন যার নিম্নে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিতা, তম্মধ্যে তারা সদা অবস্থান করবে; এবং এটাই বড় সফলতা।
ফযলুর রহমান: এগুলো আল্লাহর সীমারেখা। যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে আল্লাহ তাদেরকে এমনসব জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার তলদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত হয়। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। আর এটাই বিরাট সাফল্য।
মুহিউদ্দিন খান: এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে কেউ আল্লাহ ও রসূলের আদেশমত চলে, তিনি তাকে জান্নাত সমূহে প্রবেশ করাবেন, যেগুলোর তলদেশ দিয়ে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হবে। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। এ হল বিরাট সাফল্য।
জহুরুল হক: এইসব হচ্ছে আল্লাহ্র সীমা। আর যে কেউ আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের অনুবর্তী হয় তাকে তিনি প্রবেশ করাবেন স্বর্গোউদ্যানসমূহে যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজী, সেখানে সে থাকবে স্থায়ীভাবে আর তাই হচ্ছে মহা সাফল্য।
Sahih International: These are the limits [set by] Allah, and whoever obeys Allah and His Messenger will be admitted by Him to gardens [in Paradise] under which rivers flow, abiding eternally therein; and that is the great attainment.
তাফসীরে যাকারিয়া
অনুবাদ: ১৩. এসব আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। কেউ আল্লাহ্– ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করলে আল্লাহ তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; তারা সেখানে স্থায়ী হবে আর এটাই হলো মহাসাফল্য।
তাফসীর:
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অনুবাদ: (১৩) এসব আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। আর যে আল্লাহ ও রসূলের অনুগত হয়ে চলবে আল্লাহ তাকে বেহেশ্তে স্থান দান করবেন; যার নীচে নদীসমূহ প্রবাহিত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে এবং এ মহা সাফল্য।
তাফসীর:
-
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ
তাফসীর: ১১ হতে ১৪ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আবূ বাকর (রাঃ) আমাকে (রোগাবস্থায়) দেখার জন্য পায়ে হেঁটে আসেন। আমাকে তারা অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পান। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওযূর পানি আনতে বলেন, অতঃপর ওযূ করে আমার ওপর অবশিষ্ট পানি ছিটিয়ে দেন। তখন আমার জ্ঞান ফিরে আসে। আমি বললাম, আমার সম্পদ কী করতে বলেন? তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়-
(يُوْصِيْكُمُ اللّٰهُ فِيْٓ أَوْلَادِكُمْ)।
(সহীহ বুখারী হা: ৪৫৭৭, সহীহ মুসলিম হা: ১৬১৬)
অন্য বর্ণনায় রয়েছে, জাবের (রাঃ) বলেন: সা’দ বিন রাবী (রাঃ)-এর স্ত্রী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আগমন করলেন। অতঃপর বলেছেন: হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! এ দু’জন সা’দের মেয়ে। তাদের পিতা উহুদের ময়দানে শাহাদাত বরণ করেছেন। তাদের চাচা সমস্ত সম্পদ নিয়ে নিয়েছে, তাদের জন্য কিছুই রাখেনি। আর সম্পদ ছাড়া তো তাদের বিবাহও দেয়া যাচ্ছে না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যাপারে ফায়সালা দেবেন। তখন মীরাসের আয়াত অবতীর্ণ হয়। (আবূ দাঊদ হা: ২৮৯১, তিরমিযী হা: ২০৯২, ইবনু মাযাহ হা: ২৭২০, সহীহ)
সম্পদ বণ্টনের পূর্বে করণীয়: মৃত ব্যক্তির সম্পদ থেকে প্রথমে শরীয়ত অনুযায়ী তার কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করবে, এতে কৃপণতা ও অপব্যয় কোনটিই করবে না। এরপর তার ঋণ পরিশোধ করবে। যদি ঋণ দিতে গিয়ে সমস্ত সম্পদ শেষ হয়ে যায় তাহলেও পরিশোধ করতে হবে। তারপর সম্পদ থাকলে সমস্ত স¤পদের এক-তৃতীয়াংশ থেকে ওসীয়ত পূর্ণ করবে। তারপর উত্তরাধিকার বণ্টন হবে।
(لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنْثَيَيْنِ)
‘এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান’ অর্থাৎ দু’মেয়ে যা পাবে এক ছেলে ততটুকু পাবে। এতে মেয়েদের ওপর জুলুম করা হয়নি এবং মর্যাদা খাটোও করা হয়নি। বরং ইসলামের এ উত্তরাধিকার নিয়ম ন্যায় ও সুবিচারের দাবীসমূহের সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ, মহিলাদেরকে ইসলাম জীবিকা উপার্জনের দায়িত্ব থেকে মুক্ত রেখেছে বরং পুরুষের ওপরই এ দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়েছে । এ ছাড়া মাহর বাবদ কিছু সম্পদ মহিলাদের কাছে আসে। একজন পুরুষই এ মাল তাকে দেয়া তাছাড়া একজন মহিলা পিতার সম্পদে যেমন উত্তরাধিকারী হয় তেমনি স্বামীর সম্পদেও হয়, এরূপ উভয় পক্ষ থেকে পাওয়ার কোন সুযোগ পুরুষের নেই। এদিক দিয়ে মহিলাদের তুলনায় পুরুষের ওপর অনেক বেশি আর্থিক দায়িত্ব আরোপিত হয়। সুতরাং মহিলার অংশ যদি অর্ধেকের পরিবর্তে পুরুষের সমান হত, তাহলে পুরুষের ওপর জুলুম করা হত। আল্লাহ তা‘আলা কারো ওপর জুলুম করেন না।
আয়াতে يوصيكم এর অর্থ হল يأمركم অর্থাৎ তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
(فَاِنْ کُنَّ نِسَا۬ئً)
‘তবে যদি শুধু কন্যা হয়’ এখানে মৃত ব্যক্তির মেয়েদের উত্তরাধিকার অবস্থা বর্ণনা করা হচ্ছে। তাদের অবস্থা তিনটি: ১. মৃত ব্যক্তির মেয়ে একাই থাকলে সমস্ত সম্পদের অর্ধেক পাবে, যদি কোন মৃত ব্যক্তির ছেলে না থাকে। ২. সমস্ত সম্পদের দুই তৃতীয়াংশ পাবে, যদি দুই বা ততধিক মেয়ে থাকে আর যদি মৃত ব্যক্তির কোন ছেলে না থাকে। ৩. মৃত ব্যক্তির ছেলে থাকলে ছেলে যা পাবে মেয়ে তার অর্ধেক পাবে।
(وَلِاَبَوَیْھِ لِکُلِّ وَاحِدٍ)
‘পিতা-মাতা প্রত্যেকে তার রেখে যাওয়া সম্পদের ছয়ভাগের একভাগ পাবে’ ওয়ারিশের ক্ষেত্রে পিতা-মাতার তিনটি অবস্থা বর্ণিত হয়েছে-
১. মৃত ব্যক্তির সন্তানাদি থাকলে পিতা-মাতা উভয়ে সমস্ত মালের ছয়ভাগের একভাগ পাবে।
২. মৃত ব্যক্তির সন্তানাদি না থাকলে মা এক তৃতীয়াংশ পাবে। অবশিষ্ট দু’ভাগ “আসাবাহ” হিসেবে বাবা পাবে।
৩. পিতা-মাতার সাথে মৃত ব্যক্তির ভাই-বোন জীবিত থাকাবস্থায় মা ছয়ভাগের একভাগ পাবে। বাকি সমস্ত মাল পিতার ভাগে চলে যাবে।
(مِنْۭ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُّوْصِيْنَ بِهَآ أَوْ دَيْنٍ)
‘ওসীয়ত পালন ও ঋণ পরিশোধের পর।’ এখানে যদিও ঋণের পূর্বে অসীয়তকে আনা হয়েছে কিন্তু আগে ঋণ পরিশোধ করতে হবে তারপর অসীয়ত। এ বিষয়ে পূর্ব পরবর্তী সকল আলেম সমাজ একমত। আলী (রাঃ) বলেন: তোমরা
(مِنْۭ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُّوْصِيْنَ بِهَآ أَوْ دَيْنٍ)
অর্থাৎ আগে অসীয়ত পূর্ণ কর তারপর ঋণ পরিশোধ করে থাক, আর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অসীয়তের পূর্বে ঋণ পরিশোধ করতেন। (তিরমিযী হা: ২০৯৪, ইবনু মাযাহ হা: ২৭১৫, হাসান)
(وَلَکُمْ نِصْفُ مَا تَرَکَ اَزْوَاجُکُمْ)
‘আর তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সম্পদের অর্ধেক পাবে’ এখানে স্বামীর উত্তরাধিকার অবস্থা বর্ণনা করা হচ্ছে। স্বামীর অবস্থা দু’টি:
১. যদি তার স্ত্রীর ছেলে মেয়ে থাকে তাহলে সমস্ত সম্পদের এক-চতুর্থাংশ পাবে।
২. ছেলে-মেয়ে না থাকলে অর্ধেক পাবে।
(فَلَھُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَکْتُمْ)
‘তারা তোমাদের রেখে যাওয়া সম্পদের আটভাগের একভাগ পাবে’ এখানে স্ত্রীর উত্তরাধিকারী অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে। স্ত্রীর দু’অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে:
১. স্বামীর সন্তান থাকলে এক অষ্টমাংশ পাবে।
২. স্বামীর সন্তান না থাকলে এক চতুর্থাংশ পাবে।
كلالة ‘কালালাহ’ বলা হয় যে ব্যক্তির পিতা-মাতা ও সন্তানাদি নেই। অর্থাৎ মূলও নেই, শাখা-প্রশাখাও নেই।
বিঃ দ্রষ্টব্য: যদি স্ত্রীর মাহর আদায় না করে থাকে তাহলে সেটাও ঋণ বলে গণ্য করা হবে এবং পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে বণ্টনের পূর্বেই আদায় করা জরুরী হবে।
(وَصِیَّةً مِّنَ اللہِ)
এটা হল আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ। পরের আয়াতে বলা হয়েছে, এটা হল আল্লাহ তা‘আলার সীমারেখা। অতএব কোনক্রমেই এ সীমা লঙ্ঘন করা হালাল হবে না। মৃত্যুর পূর্বে অসীয়ত করে সমস্ত সম্পদ দিয়ে দেয়া আর ওয়ারিশদের বঞ্চিত করা হারাম। এ অসীয়ত বাতিল বলে গণ্য হবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
(إِنَّ اللّٰهُ قَدْ أَعْطٰي كُلَّ ذِي حَقٍّ حَقَّهُ فَلَا وَصِيَّةَ لِوَارِثٍ)
নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক অধিকারীকে তার প্রাপ্য অধিকার দিয়েছেন। অতএব ওয়ারীশের জন্য কোন অসীয়ত নেই। (আবূ দাঊদ হা: ২৮৭০, তিরমিযী হা: ২১২০, সহীহ)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মৃত ব্যক্তির সম্পদ বণ্টন স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা করে দিয়েছেন। এতে কোন বুদ্ধিজীবীর মন্তব্য খাটবে না।
২. আল্লাহ তা‘আলার সীমারেখা লঙ্ঘন করা হারাম।
৩. আল্লাহ তা‘আলা মহিলাদের ন্যায্য অধিকার দিয়েছেন। এ সিদ্ধান্তের ওপর সন্তুষ্ট থাকতে প্রতিটি মুসলিম নর-নারী বাধ্য, অন্যথায় ঈমান থাকবে না।
তাফসীরে ইবনে কাসীর (তাহক্বীক ছাড়া)
তাফসীর: ১৩-১৪ নং আয়াতের তাফসীর:
যে ব্যক্তি আল্লাহ তা'আলা এবং তাঁর রাসূল (সঃ)-এর অবাধ্য হয় ও তাঁর নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে, যার মধ্যে সে সদা অবস্থান করবে। এরূপ লোকদের জন্যে অপমানজনক শাস্তি রয়েছে। অর্থাৎ এসব অবশ্য করণীয় কাজ এবং এ পরিমাণ যা আল্লাহ তাআলা নির্ধারণ করেছেন ও মৃত ব্যক্তির ওয়ারিসগণকে তাদের আত্মীয়তার নৈকট্য এবং তাদের প্রয়োজন অনুপাতে যার জন্যে যে অংশ নির্দিষ্ট করেছেন এগুলো হচ্ছে আল্লাহ তা'আলার সীমারেখা, তোমরা ঐগুলো ভেঙ্গে দিয়ো না বা অতিক্রম করো না। যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার এ নির্দেশাবলী মেনে নেয়, কোন ছল-চাতুরীর আশ্রয় নিয়ে কোন উত্তরাধিকারীকে কম বেশী দেয়ার চেষ্টা করে না, বরং আল্লাহ পাকের নির্দেশ পুরোপুরি পালন করে, আল্লাহ তাআলা অঙ্গীকার করেছেন যে, তিনি তাদেরকে চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রবিষ্ট করবেন যার তলদেশ দিয়ে স্রোতস্বিনী সমূহ প্রবাহিত হতে থাকবে। তারাই সফলকাম হবে এবং তাদেরই উদ্দেশ্য সফল হবে।
পক্ষান্তরে যারা আল্লাহ পাকের নির্দেশ পরিবর্তন করে দেয়, কোন ওয়ারিসের মীরাস কম বেশী করে, তার সন্তুষ্টি কামনা করে না, বরং তাঁর নির্দেশের বিপরীত কাজ করে বা তাঁর বন্টনকে ভাল চক্ষে দেখে না কিংবা তার আদেশকে ন্যায় মনে করে না, তারা চিরস্থায়ী অপমানজনক এবং বেদনাদায়ক শাস্তির মধ্যে অবস্থান করবে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “একটি লোক সত্তর বছর পর্যন্ত পুণ্যের কাজ করতে থাকে, অতঃপর সে অসিয়তে সময় অন্যায় ও অবিচার করে, ফলে তার পরিণতি খারাপ কার্যের উপর হয়ে থাকে এবং জাহান্নামে প্রবেশ করে।
অপরপক্ষে আর একজন লোক সত্তর বছর পর্যন্ত অসৎ কাজ করতে থাকে, অতঃপর সে স্বীয় অসিয়তে ন্যায় পন্থা অবলম্বন করে, ফলে তার পরিণতি ভাল কাজের উপর হয়ে থাকে এবং সে জান্নাতে প্রবেশ লাভ করে। অতঃপর এ হাদীসটির বর্ণনাকারী হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ তোমরা (আরবী) হতে (আরবী) পর্যন্ত আয়াতটি পাঠ কর। সুনান-ই-আবি দাউদে (আরবী) -এর মধ্যে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ একজন পুরুষ লোক বা স্ত্রীলোক ষাট বছর পর্যন্ত আল্লাহ তা'আলার আনুগত্যের কার্যে লেগে থাকে, অতঃপর সে মৃত্যুর সময় অসিয়তের ব্যাপারে কষ্ট ও ক্ষতিকর কাজ করে থাকে, তখন তার জন্যে জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে যায়।
অতঃপর হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) (আরবী) হতে শেষ পর্যন্ত পাঠ করেন। জামেউত্ তিরমিযী ও সুনান-ই-ইবনে মাজার মধ্যেও এ হাদীসটি রয়েছে। ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে হাসান গারীব বলেন। মুসনাদ-ইআহমাদের মধ্যে এ হাদীসটি পূর্ণভাবে বিদ্যমান রয়েছে।
সতর্কবার্তা
কুরআনের কো্নো অনুবাদ ১০০% নির্ভুল হতে পারে না এবং এটি কুরআন পাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এখানে বাংলা ভাষায় অনূদিত প্রায় ৮ জন অনুবাদকের অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা তাদের নির্ভুলতার গ্যারান্টি দিতে পারি না।