আল কুরআন


সূরা আয-যুখরুফ (আয়াত: 22)

সূরা আয-যুখরুফ (আয়াত: 22)



হরকত ছাড়া:

بل قالوا إنا وجدنا آباءنا على أمة وإنا على آثارهم مهتدون ﴿٢٢﴾




হরকত সহ:

بَلْ قَالُوْۤا اِنَّا وَجَدْنَاۤ اٰبَآءَنَا عَلٰۤی اُمَّۃٍ وَّ اِنَّا عَلٰۤی اٰثٰرِهِمْ مُّهْتَدُوْنَ ﴿۲۲﴾




উচ্চারণ: বাল কা-লূইন্না-ওয়াজাদনাআ-বাআনা ‘আলাউম্মাতিওঁ ওয়া ইন্না-‘আলাআছা-রিহিম মুহতাদূন।




আল বায়ান: বরং তারা বলে, ‘আমরা নিশ্চয় আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এক মতাদর্শের উপর পেয়েছি, আর নিশ্চয় আমরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণে হিদায়াতপ্রাপ্ত হব’।




আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া: ২২. বরং তারা বলে, নিশ্চয় আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এক মতাদর্শের উপর পেয়েছি এবং নিশ্চয় আমরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণে হেদায়াতপ্ৰাপ্ত হব।




তাইসীরুল ক্বুরআন: বরং তারা বলে- আমরা আমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে এক ধর্মমত পালনরত পেয়েছি আর আমরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পথপ্রাপ্ত হয়েছি।




আহসানুল বায়ান: (২২) বরং ওরা বলে, ‘আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে এক মতাদর্শের অনুসারী পেয়েছি এবং আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে পথপ্রাপ্ত।’



মুজিবুর রহমান: বরং তারা বলেঃ আমরাতো আমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে পেয়েছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করছি।



ফযলুর রহমান: বরং তারা বলে, “আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে একটি ধর্মমতের অনুসারী পেয়েছি এবং আমরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে চলছি।”



মুহিউদ্দিন খান: বরং তারা বলে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছি এক পথের পথিক এবং আমরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে পথপ্রাপ্ত।



জহুরুল হক: না, তারা বলে -- "আমরা তো আমাদের পিতৃপুরুষদের একটি সম্প্রদায়ভুক্ত পেয়েছি, আর আমরা নিঃসন্দেহে তাদেরই পদচিহ্নের উপরে পরিচালিত হয়েছি।"



Sahih International: Rather, they say, "Indeed, we found our fathers upon a religion, and we are in their footsteps [rightly] guided."



তাফসীরে যাকারিয়া

অনুবাদ: ২২. বরং তারা বলে, নিশ্চয় আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এক মতাদর্শের উপর পেয়েছি এবং নিশ্চয় আমরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণে হেদায়াতপ্ৰাপ্ত হব।


তাফসীর:

-


তাফসীরে আহসানুল বায়ান

অনুবাদ: (২২) বরং ওরা বলে, ‘আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে এক মতাদর্শের অনুসারী পেয়েছি এবং আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে পথপ্রাপ্ত।”


তাফসীর:

-


তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ


তাফসীর: ২১-২৫ নম্বর আয়াতের তাফসীর :



যারা আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত দেব-দেবী, মূর্তি, চন্দ্র-সূর্য, গাছ ইত্যাদির পূজা করে তারা যে মূলত কোন প্রকার দলীল-প্রমাণ ছাড়াই পূর্ব পুরুষের দোহাই দিয়ে এ সকল কার্য-কলাপ করে সে কথাই বলা হয়েছে এ আয়াতগুলোতে। যখনই তাদের নিকট সত্যের দা‘ওয়াত দেয়া হয় তখনই তারা তাদের পূর্ব-পুরুষদের দোহাই দিয়ে সে সত্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। তারা বলে থাকে আমরা তো ইতোপূর্বে এরূপ কোন কথা শুনিনি। আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে যেরূপ করতে দেখেছি সেরূপই করব। আমরা তোমাদেরকে অস্বীকার করি এবং মিথ্যাবাদী মনে করি। তাই আল্লাহ তা‘আলা এখানে তাদেরকে ভর্ৎসনা করে বলছেন যে, ইতোপূর্বে আমি কি তাদেরকে কোন কিতাব দান করেছি যা তারা আঁকড়ে ধরে আছে? মূলত তা নয়, বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে নিজেদেরকে তাদের অনুসারী বলে থাকে।



আল্লাহ তা‘আলা বলেন :



(ثُمَّ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا تَتْرَا ط كُلَّمَا جَا۬ءَ أُمَّةً رَّسُوْلُهَا كَذَّبُوْهُ فَأَتْبَعْنَا بَعْضَهُمْ بَعْضًا وَّجَعَلْنٰهُمْ أَحَادِيْثَ ج فَبُعْدًا لِّقَوْمٍ لَّا يُؤْمِنُوْنَ)‏



“অতঃপর আমি একের পর এক আমার রাসূল প্রেরণ করেছি। যখনই কোন জাতির নিকট তার রাসূল এসেছে তখনই তারা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। অতঃপর আমি তাদের একের পর এক ধ্বংস করলাম। আমি তাদেরকে কাহিনীর বিষয়ে পরিণত করেছি। সুতরাং ধ্বংস সে সম্প্রদায়! যারা ঈমান আনে না (আল্লাহর রহমত হতে তারা অনেক দূরে)!” (সূরা মু’মিনূন ২৩ : ৪৪)



তারা তাদের এ অন্ধ অনুসরণের কারণে সত্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থেকেছে, ফলে তারাই হয়েছে জাহান্নামে শাস্তির অধিকারী। সুতরাং যখন যার কাছে সত্য প্রকাশিত হবে তখন উচিত হবে তা দ্বিধা-সংকোচহীনভাবে মেনে নেয়া।



আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :



১. শরীয়তের যে কোন আমল করতে হলে তার দলীল-প্রমাণ থাকতে হবে। দলীল-প্রমাণ ছাড়া কোন কাজ করা যাবে না।

২. একজন ব্যক্তি যত নিকটাত্মীয়ই হোক না কেন এমনকি নিজের পিতা হলেও তার অন্ধ অনুসরণ করা যাবে না।

৩. প্রত্যেক যুগে সমাজের সমৃদ্ধশালীরাই সত্যের বিরোধিতা করেছে।


তাফসীরে ইবনে কাসীর (তাহক্বীক ছাড়া)


তাফসীর: ২১-২৫ নং আয়াতের তাফসীর:

আল্লাহ তা'আলা বলেন যে, যে লোকেরা আল্লাহ ছাড়া অন্যদের ইবাদত করে তাদের কাছে এ ব্যাপারে দলীল প্রমাণ কিছুই নেই। তাই তিনি বলেনঃ “আমি কি তাদেরকে কুরআনের পূর্বে কোন কিতাব দান করেছি যা তারা দৃঢ়ভাবে ধারণ করে আছে? অর্থাৎ তাদের কাছে কি তাদের শিরকের দলীল স্বরূপ কোন কিতাব বিদ্যমান রয়েছে? অর্থাৎ প্রকৃতপক্ষে এরূপ দলীল সম্বলিত কোন কিতাব তাদের কাছে নেই। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি কি তাদের উপর এমন সুলতান অবতীর্ণ করেছি যে তাদেরকে শিরক করতে বলে?”(৩০:৩৫) অর্থাৎ এই রূপ নয়।

মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ ‘বরং তারা বলে- আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করছি।' অর্থাৎ শিরকের কোন দলীল তাদের কাছে নেই, শুধুমাত্র দলীল এটাই যে, তাদের পূর্বপুরুষরা এরূপ করতো। তাদেরকেই তারা অনুসরণ করছে। এখানে উম্মত’ দ্বারা দ্বীনকে বুঝানো হয়েছে।

মহান আল্লাহ স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে বলেনঃ “এই ভাবে আমি তোমার পূর্বে কোন জনপদে যখনই কোন সতর্ককারী প্রেরণ করেছি তখন ওর শক্তিশালী ব্যক্তিরা বলতো- আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করছি।' যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ তাদের পূর্ববর্তীদের নিকটও রাসূল এসেছিল, কিন্তু তারা তাকে যাদুকর ও পাগল বলেছিল।”(৫১:৫২) সুতরাং পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সবারই মুখে এই একই কথা ছিল। প্রকৃতপক্ষে ঔদ্ধত্য ও হঠকারিতায় এরা সবাই সমান।

ঐ সতর্ককারী তাদেরকে বলতেনঃ তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে পথে পেয়েছো, আমি যদি তোমাদের জন্যে তদপেক্ষা উৎকৃষ্ট পথ-নির্দেশ আনয়ন করি, তবুও কি তোমরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করবে? উত্তরে তারা বলতোঃ ‘তোমরা যা সহ প্রেরিত হয়েছে আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি।' অর্থাৎ তারা যদিও জানতো যে, নবীদের শিক্ষা তাদের পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ হতে বহুগুণে শ্রেয়, তথাপি তাদের ঔদ্ধত্য ও হঠকারিতা তাদেরকে সত্য কল করতে দেয়নি। তাই মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ “অতঃপর আমি তাদেরকে তাদের কর্মের প্রতিফল দিলাম। দেখো, মিথ্যাচারীদের পরিণাম কি হয়েছে! অর্থাৎ কাফিরদেরকে কিভাবে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে এবং কিভাবে মুমিনরা মুক্তি পেয়েছে তা তুমি লক্ষ্য কর।





সতর্কবার্তা
কুরআনের কো্নো অনুবাদ ১০০% নির্ভুল হতে পারে না এবং এটি কুরআন পাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এখানে বাংলা ভাষায় অনূদিত প্রায় ৮ জন অনুবাদকের অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা তাদের নির্ভুলতার গ্যারান্টি দিতে পারি না।