আল কুরআন


সূরা আলে-ইমরান (আয়াত: 105)

সূরা আলে-ইমরান (আয়াত: 105)



হরকত ছাড়া:

ولا تكونوا كالذين تفرقوا واختلفوا من بعد ما جاءهم البينات وأولئك لهم عذاب عظيم ﴿١٠٥﴾




হরকত সহ:

وَ لَا تَکُوْنُوْا کَالَّذِیْنَ تَفَرَّقُوْا وَ اخْتَلَفُوْا مِنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَهُمُ الْبَیِّنٰتُ ؕ وَ اُولٰٓئِکَ لَهُمْ عَذَابٌ عَظِیْمٌ ﴿۱۰۵﴾ۙ




উচ্চারণ: ওয়ালা-তাকূনূ কাল্লাযীনা তাফাররাকূওয়াখতালাফূ মিম বা‘দি মা-জাআহুমুল বাইয়িনা-তু ওয়া উলাইকা লাহুম ‘আযা-বুন ‘আজীম।




আল বায়ান: আর তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা বিভক্ত হয়েছে এবং মতবিরোধ করেছে তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ আসার পর। আর তাদের জন্যই রয়েছে কঠোর আযাব।




আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া: ১০৫. তোমরা তাদের মত হয়ে না, যারা তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে(১) ও নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করেছে। আর তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি।




তাইসীরুল ক্বুরআন: তোমরা সেই লোকদের মত হয়ে যেয়ো না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন পৌঁছার পরে বিভক্ত হয়েছে ও মতভেদ করেছে এবং এ শ্রেণীর লোকেদের জন্য আছে মহা শাস্তি।




আহসানুল বায়ান: (১০৫) তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন আসার পর (বিভিন্ন দলে) বিভক্ত হয়েছে[1] ও নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি।



মুজিবুর রহমান: এবং তাদের মতো হয়োনা যাদের নিকট স্পষ্ট প্রমাণ আসার পরও বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে ও পরস্পর মতভেদে লিপ্ত রয়েছে; তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি।



ফযলুর রহমান: তোমরা তাদের মত হয়ো না যারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়েছিল এবং তাদের কাছে নিদর্শনসমূহ আসার পরও মতভেদ করেছিল। ওদের জন্য রয়েছে বিরাট শাস্তি।



মুহিউদ্দিন খান: আর তাদের মত হয়ো না, যারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং নিদর্শন সমূহ আসার পরও বিরোধিতা করতে শুরু করেছে-তাদের জন্যে রয়েছে ভয়ঙ্কর আযাব।



জহুরুল হক: আর তাদের মতো হয়ো না যারা বিচ্ছিন্ন হয়েছিল আর মতভেদ করেছিল তাদের কাছে সুস্পষ্ট নির্দেশাবলী আসার পরেও। আর এরা -- এদের জন্য আছে কঠোর যন্ত্রণা, --



Sahih International: And do not be like the ones who became divided and differed after the clear proofs had come to them. And those will have a great punishment.



তাফসীরে যাকারিয়া

অনুবাদ: ১০৫. তোমরা তাদের মত হয়ে না, যারা তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে(১) ও নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করেছে। আর তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি।


তাফসীর:

(১) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ দুই কিতাবী সম্প্রদায় তাদের দ্বীনের মধ্যে বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে। আর এ উম্মত তিহাত্তর দলে বিভক্ত হবে। প্রত্যেক দলই জাহান্নামে যাবে কেবলমাত্র একটি দল ব্যতীত। আর তারা হল আল-জামাআতের অনুসারী। আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু দল বেরুবে যাদেরকে কুপ্রবৃত্তি এমনভাবে তাড়িয়ে বেড়াবে, যেমন পাগলা কুকুরে কামড়ানো ব্যক্তিকে সর্বদা কুকুর তাড়িয়ে বেড়ায়। [আবু দাউদঃ ৪৫৯৭, মুসনাদে আহমাদঃ ৪/১০২]


তাফসীরে আহসানুল বায়ান

অনুবাদ: (১০৫) তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন আসার পর (বিভিন্ন দলে) বিভক্ত হয়েছে[1] ও নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি।


তাফসীর:

[1] ‘সুস্পষ্ট নিদর্শন আসার পর (বিভিন্ন দলে) বিভক্ত হয়েছে’ এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের পারস্পরিক বিরোধ ও দলাদলির কারণ এই ছিল না যে, তারা সত্য জানতো না এবং দলীলাদির ব্যাপারে অজ্ঞ ছিল, বরং প্রকৃত ব্যাপার হল এই যে, তারা সব কিছু জানা সত্ত্বেও কেবল দুনিয়ার লোভে এবং ব্যক্তিস্বার্থ অর্জনের লক্ষ্যে বিরোধ ও দলাদলির পথ অবলম্বন করেছিল এবং এ পদ্ধতি শক্ত করে আঁকড়ে ধরেছিল। কুরআন মাজীদ বারংবার বিভিন্নভাবে (তাদের) প্রকৃত ব্যাপারকে তুলে ধরেছে এবং তা থেকে দূরে থাকার তাকীদও করেছে। কিন্তু বড় পরিতাপের বিষয় যে, এই উম্মতের বিভেদ সৃষ্টিকারীরাও ঠিক ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের মতই স্বভাব অবলম্বন করেছে। তারাও সত্য এবং তার প্রকাশ্য দলীলাদি খুব ভালভাবেই জানে, তা সত্ত্বেও তারা দলাদলি ও ভাগাভাগির উপর শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে এবং নিজেদের জ্ঞান-বুদ্ধির সমস্ত মেধাকে বিগত জাতিদের মত (শরীয়তের) অপব্যাখ্যা এবং বিকৃতি করার জঘন্য কাজে নষ্ট করছে।


তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ


তাফসীর: ১০৪-১০৯ নং আয়াতের তাফসীর:



আল্লাহ তা‘আলা এখানে মুসলিম উম্মাহকে সম্বোধন করে বলছেন, তোমাদের এমন একটি দল থাকা আবশ্যক যারা কুরআন ও সুন্নাহর দিকে মানুষকে আহ্বান করবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: خير বা কল্যাণ হল



اتباع القران وسنتي



কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণ করা। (সহীহ বুখারী হা: ৬৪৬৪, সহীহ মুসলিম হা: ২১৭১)



আবুল আলিয়া বলেন: কুরআনে যে সকল আয়াতে



امر بالمعروف



বা সৎ কাজের আদেশ এসেছে সেসকল সৎ কাজ দ্বারা উদ্দেশ্য হল ইসলাম, আর যেখানে



نهي عن المنكر



বা অসৎ কাজ থেকে নিষেধের কথা এসেছে সে সকল অসৎ কাজ দ্বারা মূর্তি পূজা ও শয়তানকে বুঝানো হয়েছে। (ফাতহুল কাদীর, ১/ ৪৯৯)



রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি কোন অসৎ কাজ প্রত্যক্ষ করবে, সে যেন তা হাত দ্বারা তা প্রতিহত করে। তাতে সক্ষম না হলে জবান দ্বারা প্রতিহত করবে, তাতেও সক্ষম না হলে অন্তর দ্বারা ঘৃণা করবে। এটা সবচেয়ে দুর্বল ঈমান। (সহীহ মুসলিম হা: ৪৯, আবূ দাঊদ হা: ১১৪০, তিরমিযী হা: ২১৭৬)



যারা দীনের এ মহতী কাজে আত্মনিয়োগ করবে তারাই সফলকাম হবে।



এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের মত হতে নিষেধ করেছেন যারা দলে দলে বিভক্ত হয়ে গেছে। আর তারা হল ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানরা। কেউ কেউ বলেন, তারা হল বিদআতীরা। তবে প্রথম উক্তিটিই উত্তম। (আইসারুত তাফাসীর, ১/২৭৯, অত্র আয়াতের তাফসীর)



রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ইয়াহূদীরা ৭১ দলে বিভক্ত হয়েছে, খ্রিস্টানরা ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছে আর আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। সবাই জাহান্নামে যাবে তবে একটি দল ছাড়া। জিজ্ঞাসা করা হল, তারা কারা? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তারা হল এ সমস্ত লোক যারা আজ আমি ও আমার সাহাবাগণ যে আকীদাহ ও আমলের ওপর প্রতিষ্ঠিত আছি তার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। (আবূ দাঊদ হা: ৪৫৯৬, ৪৫৯৭, তিরমিযী হা: ২৬৪০-৪১, ইবনু মাযাহ হা: ৩৯৯১, ৩৯৯৩, সহীহ)



সুতরাং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কোন সুনির্দিষ্ট দলকে ফিরকাহ নাজীয়া বলে উল্লেখ করেননি। সে অনুযায়ী যে সকল মু’মিন-মুসলিম ব্যক্তিরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবীদের আমল ও আকীদাহর ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে তারাই ফিরকাহ নাজীয়া বা মুক্তিপ্রাপ্ত দল।



যারা সত্য জানার পরেও দলে দলে বিভক্ত হয়েছে তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি।



কিয়ামতের দিন কতক ব্যক্তির চেহারা হবে উজ্জ্বল, ইবনু আব্বাস বলেন, তারা হল: আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ। আর কতক ব্যক্তির চেহারা মলিন হবে। তিনি (রাঃ) বলেন, তারা হল: বিদ‘আতী ও যারা দলে দলে বিভক্ত হয়েছে। হাসান বসরী (রহঃ) বলেন: তারা হল মুনাফিক। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ২/১০০, ফাতহুল কাদীর, ১/৫০০)। সুতরাং দলে দলে বিভক্ত হবার কোন সুযোগ নেই। যারা দলে দলে বিভক্ত হবে তারা ইসলাম বহির্ভূত।



আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:



১. উম্মাতে মুহাম্মাদীর এমন একটি দল থাকা আবশ্যক যারা কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর আলোকে ইসলামের দিকে আহ্বান করবে।

২. দলে দলে বিভক্ত হওয়া হারাম।

৩. কিয়ামাতের দিন বিদ‘আতী ও যারা প্রবৃত্তি পূজারী তাদেরকে মলিন চেহারায় দেখা যাবে।

৪. আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত তারাই যারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবাগণ যে আকীদাহ ও আমালের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন তার ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে।

৫. সংখ্যাগরিষ্ঠতা সত্যের মাপকাঠি নয় বরং কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ-ই হলো সত্যের মাপকাঠি।


তাফসীরে ইবনে কাসীর (তাহক্বীক ছাড়া)


তাফসীর: ১০৪-১০৯ নং আয়াতের তাফসীর:

হযরত যাহ্হাক (রঃ) বলেন যে, এই দল’ হতে ভাবার্থ হচ্ছে বিশিষ্ট সাহাবা ও বিশিষ্ট হাদীসের বর্ণনাকারী। অর্থাৎ মুজাহিদ এবং আলেমগণ। ইমাম আবু যাফর বাকের (রঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এ আয়াতটি পাঠ করেন, অতঃপর বলেনঃ (আরবী) শব্দের ভাবার্থ হচ্ছে কুরআন ও হাদীসের অনুসরণ। এটা অবশ্যই স্মরণ রাখার বিষয় যে, প্রত্যেকের উপরেই স্বীয় ক্ষমতা অনুযায়ী সত্যের প্রচার ফরয। কিন্তু তথাপিও একটি বিশেষ দল এ কার্যে লিপ্ত থাকা প্রয়োজন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “তোমাদের মধ্যে যে কেউ কাউকে কোন অন্যায় কাজ করতে দেখে, সে যেন তাকে হাত দ্বারা বাধা দেয়, যদি এতে তার ক্ষমতা না থাকে তবে যেন জিহ্বা (কথা) দ্বারা বাধা প্রধান করে, যদি এটাও করতে না পারে তবে যেন অন্তর দ্বারা তাকে ঘৃণা করে এবং এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্বল ঈমান। অন্য একটি বর্ণনায় এর পরে এও রয়েছে - ‘ওর পরে সরিষার বীজ পরিমাণও ঈমান নেই'। (সহীহ মুসলিম) মুসনাদ-ই-আহমাদে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! তোমরা সৎকার্যের আদেশ ও মন্দকার্য হতে নিষেধ করতে থাক, নতুবা সত্বরই আল্লাহ তা'আলা তোমাদের উপর স্বীয় শাস্তি অবতীর্ণ করবেন। অতঃপর তোমরা প্রার্থনা করবে কিন্তু তা গৃহীহ তবে না।' এ বিষয়ের আরও হাদীস রয়েছে সেগুলো ইনশাআল্লাহ অন্য স্থলে বর্ণিত হবে।

অতঃপর বলা হচ্ছে- “তোমরা পূর্ববর্তী লোকদের মত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে মতবিরোধ সৃষ্টি করো না। ভাল কার্যের আদেশ ও মন্দ কার্য হতে নিষেধ করা তোমরা পরিত্যাগ করো না।' মুসনাদ-ই-আহমাদের মধ্যে রয়েছে যে, হযরত মুআবিয়া ইবনে আবু সুফইয়ান (রাঃ) হজ্বের উদ্দেশ্যে মক্কায় আগমন করেন। যোহরের নামাযের পর তিনি দাড়িয়ে বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন-“কিতাব প্রাপ্তগণ তাদের ধর্মের ব্যাপারে মতভেদ সৃষ্টি করে ৭২টি দল হয়ে গেছে। আর আমার এ উম্মতের ৭৩টি দল হয়ে যাবে। অর্থাৎ সবাই প্রবৃত্তির বশীভূত হয়ে পড়বে। কিন্তু আরও একটি দল রয়েছে এবং আমার উম্মতের মধ্যে এমন লোকও হবে যাদের শিরায় শিরায় কুপ্রবৃত্তি এমনভাবে প্রবেশ করবে যেমন কুকুরে কাটা ব্যক্তির শিরায় শিরায় বিষক্রিয়া পৌঁছে যায়। হে আরববাসী! তোমরাই যদি তোমাদের নবী (সঃ) কর্তৃক আনয়নকৃত বস্তুর উপর প্রতিষ্ঠিত না থাক, তবে অন্যান্য লোক তো আরও বহু দূরে সরে পড়বে।' এ হাদীসটির বহু সনদ রয়েছে। এর পর আল্লাহ পাক বলেন- ‘সেদিন কতকগুলো লোকের মুখমণ্ডল শ্বেতবর্ণ ধারণ করবে এবং কতকগুলো লোক কৃষ্ণ চেহারা বিশিষ্টও হবে।' হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মুখমণ্ডল শ্বেত বর্ণ ও আলোকোজ্জ্বল হবে এবং আহলে বিদ'আতের মুখমণ্ডল হবে কৃষ্ণ বর্ণের। হযরত হাসান বসরী (রঃ) বলেন যে, এ কৃষ্ণ বর্ণ বিশিষ্ট লোকেরা মুনাফিকের দল। তাদেরকে বলা হবে- তোমরা বিশ্বাস স্থাপনের পরিবর্তে অস্বীকার করেছিলে বলে আজকার স্বাদ গ্রহণ কর। আর শ্বেতবর্ণ বিশিষ্ট লোকগণ আল্লাহ তাআলার করুণার মধ্যে সদা অবস্থান। করবে। হযরত আবু উমামা (রাঃ) খারেজীদের মস্তকগুলো দামেশকের মসজিদের স্তম্ভে লটকানো দেখে বলেনঃ এরা নরকের কুকুর। এদের চেয়ে বেশী জঘন্য নিহত ব্যক্তি ভূ-পৃষ্ঠের কোথাও নেই। এদেরকে হত্যাকারীগণ উত্তম মুজাহিদ।' অতঃপর (আরবী)-এ আয়াতটি পাঠ করেন। আবূ গালিব (রঃ) তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “আপনি কি এটা স্বয়ং রাসূলুল্লাহ হতে শুনেছেনে?' তিনি বলেনঃ “একবার দু’বার নয় বরং সাতবার শুনেছি। এরূপ না হলে আমি এ শব্দগুলো আমার মুখ দ্বারা বেরই করতাম না। এখানে ইবনে মিরদুওয়াই (রঃ) হযরত আবু যার (রাঃ)-এর বর্ণনায় একটি সুদীর্ঘ হাদীস নকল করেছেন, যা অত্যন্ত বিস্ময়কর। কিন্তু সনদ হিসেবে এটা গারীব। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলেন, “হে নবী (সঃ)! ইহকাল ও পরকালে এ কথাগুলো আমি তোমার নিকট প্রকাশ করে দিচ্ছি। আল্লাহ ন্যায় বিচারক, তিনি মোটেই অত্যাচারী নন। প্রত্যেক জিনিসকেই তিনি খুব ভালই জানেন। প্রত্যেক জিনিসের উপর তিনি ক্ষমতাবানও বটে। সুতরাং তিনি যে কারও উপর অত্যাচার করবেন এটা মোটেই সম্ভব নয়। আকাশ ও পৃথিবীর সমুদয় জিনিস তারই অধিকারে রয়েছে। সবই তাঁর দাসত্বের শৃংখলে আবদ্ধ। সমুদয় কৃতকর্ম তার দিকেই প্রত্যাবর্তিত হয়। ইহজগতের ও পরজগতের পূর্ণ ক্ষমতবান শাসক একমাত্র তিনিই।





সতর্কবার্তা
কুরআনের কো্নো অনুবাদ ১০০% নির্ভুল হতে পারে না এবং এটি কুরআন পাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এখানে বাংলা ভাষায় অনূদিত প্রায় ৮ জন অনুবাদকের অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা তাদের নির্ভুলতার গ্যারান্টি দিতে পারি না।