সূরা ইয়াসীন (আয়াত: 13)
হরকত ছাড়া:
واضرب لهم مثلا أصحاب القرية إذ جاءها المرسلون ﴿١٣﴾
হরকত সহ:
وَ اضْرِبْ لَهُمْ مَّثَلًا اَصْحٰبَ الْقَرْیَۃِ ۘ اِذْ جَآءَهَا الْمُرْسَلُوْنَ ﴿ۚ۱۳﴾
উচ্চারণ: ওয়াদরিব লাহুম মাছালান আসহা-বাল কারইয়াহ । ইযজাআহাল মুরছালূন।
আল বায়ান: আর এক জনপদের অধিবাসীদের উপমা তাদের কাছে বর্ণনা কর, যখন তাদের কাছে রাসূলগণ এসেছিল।
আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া: ১৩. আর তাদের কাছে বর্ণনা করুন এক জনপদের অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত; যখন তাদের কাছে এসেছিল রাসূলগণ।
তাইসীরুল ক্বুরআন: তাদের কাছে দৃষ্টান্ত স্বরূপ এক জনপদবাসীদের কথা শুনিয়ে দাও যখন তাদের কাছে এসেছিল রসূলগণ।
আহসানুল বায়ান: (১৩) ওদের নিকট এক জনপদের অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত উপস্থিত কর, যাদের নিকট রসূল এসেছিল।[1]
মুজিবুর রহমান: তাদের নিকট উপস্থিত কর এক জনপদের অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত; তাদের নিকট এসেছিল রাসূলগণ।
ফযলুর রহমান: তুমি তাদের জন্য (এন্তাকিয়া) জনপদের অধিবাসীদের একটি উদাহরণ পেশ করো: যখন সেখানে রসূলগণ এসেছিল।
মুহিউদ্দিন খান: আপনি তাদের কাছে সে জনপদের অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত বর্ণনা করুন, যখন সেখানে রসূল আগমন করেছিলেন।
জহুরুল হক: আর তাদের জন্য উপমা ছোঁড়ো এক জনপদের অধিবাসীদের -- যখন সেখানে রসূলগণ এসেছিলেন।
Sahih International: And present to them an example: the people of the city, when the messengers came to it -
তাফসীরে যাকারিয়া
অনুবাদ: ১৩. আর তাদের কাছে বর্ণনা করুন এক জনপদের অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত; যখন তাদের কাছে এসেছিল রাসূলগণ।
তাফসীর:
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অনুবাদ: (১৩) ওদের নিকট এক জনপদের অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত উপস্থিত কর, যাদের নিকট রসূল এসেছিল।[1]
তাফসীর:
[1] যাতে মক্কাবাসী এটা বুঝতে পারে যে, তুমি কোন নতুন রসূল নও; বরং রসূল ও নবীগণের আগমনের এই ধারাবাহিকতা পূর্ব থেকেই চলে আসছে।
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ
তাফসীর: ১৩-২১ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে একটি জনবসতির ঘটনা বর্ণনার নির্দেশ দিচ্ছেন, যে জনবসতির নিকট দু’জন রাসূল প্রেরণ করা হয়েছিল। কিন্তু সে বসতির লোকেরা দু’জন রাসূলকেই মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল। তৎক্ষণাৎ তাদের দু’জনের শক্তি বৃদ্ধি কল্পে তৃতীয় আরেকজনকে নাবী হিসেবে পাঠানো হয়েছিল এবং নাবীগণ বললেন যে, আমরা তোমাদের নিকট দয়াময় আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে প্রেরিত হয়েছি, আমরা মিথ্যাবাদী না। নাবীগণের এ কথার উত্তরে জনবসতির অধিবাসীগণ বলল : তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ, সুতরাং দয়াময় আল্লাহ তা‘আলা কোন মানুষকে রাসূল করে পাঠাতে পারেন না। বরং তোমরা এ ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলছ। যেমন তাদের উক্তি :
(ذٰلِكَ بِأَنَّه۫ كَانَتْ تَّأْتِيْهِمْ رُسُلُهُمْ بِالْبَيِّنٰتِ فَقَالُوْآ أَبَشَرٌ يَّهْدُوْنَنَا ز فَكَفَرُوْا وَتَوَلَّوْا وَّاسْتَغْنَي اللّٰهُ ط وَاللّٰهُ غَنِيٌّ حَمِيْدٌ)
“তা এ জন্য যে, তাদের নিকট তাদের রাসূলগণ স্পষ্ট নিদর্শনাবলীসহ আসতেন। তখন তারা বলত : মানুষই কি আমাদেরকে পথের সন্ধান দিবে? অতঃপর তারা কুফরী করল ও মুখ ফিরিয়ে নিলো; কিন্তু এতে আল্লাহর কিছু যায় আসে না। আর আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, প্রশংসিত।” (সূরা তাগাবুন ৬৪ : ৬)
জনবসতির কথার প্রত্যুত্তরে নাবীগণ তাদেরকে বললেন যে, আমাদের দায়িত্ব শুধু তোমাদের নিকট স্পষ্টভাবে আল্লাহ তা‘আলার বাণী পৌঁছে দেয়া আর এ ব্যাপারে আমাদের প্রতিপালক অবগত আছেন যে, আমরা তোমাদের নিকট তাঁর পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসূল। তিনিই আমাদের ব্যাপারে সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট।
আল্লাহ তা‘আলার বাণী :
(قُلْ كَفٰي بِاللّٰهِ بَيْنِيْ وَبَيْنَكُمْ شَهِيْدًا)
“বল : ‘আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।” (সূরা আনকাবুত ২৯ : ৫২) উপরোক্ত আলোচনা থেকে কয়েকটি বিষয় জানা যায় :
১. পূর্ববর্তী উম্মাতের কাছে যারা রাসূল হিসেবে এসেছেন তারা সবাই মানুষ ছিলেন এবং যাদের কাছে এসেছিলেন তারাও জানত যে, এরা আমাদের মত মানুষ। অতএব কেন আমরা এরূপ মানুষের কথা মানব। যেমন সূরা ইসরার ৯৪ নম্বর আয়াতে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে এক শ্রেণির মানুষ রয়েছে যারা নিজেদেরকে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেয় কিন্তু তারা নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মাটির মানুষ বিশ্বাস করতে চায় না। এ আয়াত থেকে তাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।
২. তারা যখন দু’জন রাসূলকে সাধারণভাবে অস্বীকার করল তখন আল্লাহ তা‘আলা তৃতীয় আরেকজনকে প্রেরণ করলেন এবং তারা বললেন : নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের কাছে প্রেরিত রাসূল। তারপরেও যখন অস্বীকার করল, তখন রাসূলগণ বললেন : আল্লাহ তা‘আলা জানেন, অবশ্যই আমরা তোমাদের কাছে নিশ্চিত প্রেরিত রাসূল। অর্থাৎ তাদের অস্বীকার যত বাড়ল রাসূলদের কথার গুরুত্বও তত বাড়ল।
উক্ত গ্রাম কোথায় ও তিনজন প্রেরিত রাসূল কারা ছিলেন তা নিয়ে কোন নির্ভরযোগ্য বর্ণনা পাওয়া যায় না। তবে কোন কোন মুফাসসিরদের ধারণা, সে গ্রামটি ছিল আন্তাকিয়া। যেমন ইবনু আব্বাস, কা‘ব ও ওহাব বিন মুনাব্বাহ (রাঃ) বলেছেন। মু’জামুল বুলদানের বর্ণনানুযায়ী ‘আন্তাকিয়া’ শাম দেশের একটি প্রাচীন নগরী। যা তার সমৃদ্ধি ও স্থাপত্যের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। এ নগরীর দুর্গ ও নগর প্রাচীন দর্শনীয় বস্তু ছিল। এতে খ্রিস্টানদের বড় বড় স্বর্ণ-রৌপ্যের কারুকার্য খচিত সুশোভিত গির্জা অবস্থিত রয়েছে। এটি একটি উপকূলীয় নগরী। ইসলামী আমলে শামবিজয়ী সাহাবী আবূ ওবায়দা ইবনুল জাররাহ (রাঃ) এ শহরটি জয় করেছিলেন। নাবী তিনজন ছিলেন- সাদেক, সাদুক ও শামুল। (ইবনু কাসীর)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ এলাকাবাসীর ঘটনা বর্ণনা করার নির্দেশ দেয়ার কারণ হলো যাতে মক্কাবাসীসহ পৃথিবীর মানুষ জানতে পারে মুহাম্মাদ কোন নতুন নাবী নন, পূর্বে অনেক নাবী এসেছেন এবং এটাও যেন জানতে পারে, রাসূল গায়েব জানেন না বরং ওয়াহী মারফত পূর্ববর্তীদের এসব ঘটনা জেনেছেন। রাসূলগণ যে দাওয়াত নিয়ে এসেছেন তা বর্জন করলে ধ্বংস অনিবার্য এ কথাও যাতে জেনে নিতে পারে।
(إِنَّا تَطَيَّرْنَا بِكُمْ) تطير
অর্থ কুলক্ষণ গ্রহণ করা। অর্থাৎ তারা রাসূলগণকে বলল, তোমাদের আগমনে আমরা অকল্যাণকর ও আমাদের জন্য অশুভ মনে করছি। যদি তোমরা চলে না যাও তাহলে পাথর মেরে হত্যা করব এবং আমাদের থেকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ভোগ করবে।
(قَالُوْا طَآئِرُكُمْ مَّعَكُمْ)
অর্থাৎ তাদের কথার উত্তরে রাসূলগণ বললেন : তোমাদের অকল্যাণ তোমাদের সাথেই, কেননা তোমরা এক সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়। যেমন সালেহ (আঃ)-এর সম্প্রদায় বলেছিল :
(قَالُوا اطَّيَّرْنَا بِكَ وَبِمَنْ مَّعَكَ ط قَالَ طَآئِرُكُمْ عِنْدَ اللّٰهِ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ تُفْتَنُوْنَ)
“তারা বলল : ‘তোমাকে ও তোমার সঙ্গে যারা আছে তাদেরকে আমরা অমঙ্গলের কারণ মনে করি।’ সে বলল : ‘তোমাদের অকল্যাণ আল্লাহর ইখতিয়ারে, বস্তুত তোমরা এমন এক সম্প্রদায় যাদেরকে পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’ (সূরা নামল ২৭ : ৪৭) এমনকি তারা সত্যের দা‘ওয়াত গ্রহণ করা থেকে বিরতই থাকল এবং রাসূলগণকে হত্যা করার পরিকল্পনা করল।
ঐ জনবসতির একজন মু’মিন ব্যক্তি ছিল যে শহরের শেষ প্রান্তে বসবাস করত। সে তাদের নিকট ছুটে আসলো ও বলল : হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা প্রেরিত ব্যক্তি (রাসূলগণ)-দের অনুসরণ করো। অনুসরণ করো তাদের যারা তোমাদের নিকট কোনই পারিশ্রমিক চায় না। তাঁদের স্বার্থের জন্য নয়, বরং তোমাদের কল্যাণার্থেই তাঁরা তোমাদেরকে সৎ পথের দিকে আহ্বান করছেন। সুতরাং তাঁদের আহ্বানে তোমাদের সাড়া দেয়া উচিত এবং তাঁদের আনুগত্য করা কর্তব্য। এতদসত্ত্বেও তারা ঈমান আনল না, রাসূলগণকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল এবং তাঁদেরকে অকল্যাণের কারণ মনে করল। এ লোকটির নাম কী ছিল তা নিয়ে অনেক মতামত পাওয়া যায়। তবে অনেকে বলেছেন : তার নাম ইয়াসিন হাবীব।
বিঃদ্রঃ কুরআন যে সকল ব্যক্তি, বস্তু বা স্থানের নাম বা অন্য কিছু অস্পষ্ট করে ছেড়ে দিয়েছে এবং সহীহ হাদীসে তার কোন বর্ণনা নেই তা জানা কোন জরুরী বিষয় নয়। বরং এগুলো নিয়ে বাড়াবাড়ি করা ধর্মকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করার শামিল।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. রাসূলগণের দায়িত্ব শুধু স্পষ্টভাবে তাদের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া। কাউকে মানার জন্য বাধ্য করা নয়। বর্তমানে ‘আলিম সমাজের দায়িত্বও তা-ই। তারা মানুষকে হক্বের পথে দা‘ওয়াত দিবে।
২. দা‘ওয়াতী কাজ করে বিনিময় গ্রহণ না করাটাই উত্তম। যেমন নাবী-রাসূলগণ বিনিময় গ্রহণ করেননি। তবে যদি এর জন্য এমন সময় ব্যয় হয় যে কারণে পরিবারের ব্যয়-ভার উপার্জন করতে সময় পাওয়া যায় না তাহলে উপযুক্ত পরিমাণ বিনিময় নেওয়া যেতে পারে।
৩. রাসূলগণ মানুষ, তাদেরকে রিসালাত দেয়া হয়েছে মানুষকে সঠিক পথের দিকে আহ্বান করার জন্য।
৪. যা জানলে কোন উপকারে আসবে না তা থেকে বিরত থাকাই উত্তম।
তাফসীরে ইবনে কাসীর (তাহক্বীক ছাড়া)
তাফসীর: ১৩-১৭ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ হে মুহাম্মাদ (সঃ)! তোমার কওমের সামনে তুমি ঐ লোকদের ঘটনা বর্ণনা কর যারা এদের মত তাদের রাসূলদেরকে অবিশ্বাস করেছিল। এটা হলো ইনতাকিয়া শহরের ঘটনা। তথাকার বাদশাহর নাম ইনতায়খাস। তার পিতা ও পিতামহেরও এই নামই ছিল। রাজা ও প্রজা সবাই মূর্তিপূজক ছিল। তাদের কাছে সাদিক, সদূক ও শালুম নামক আল্লাহর তিনজন রাসূল আগমন করেন। কিন্তু এ দুর্বত্তরা তাদেরকে অবিশ্বাস করে। সতুরই এই বর্ণনা আসছে যে, এটা যে ইনতাকিয়ার ঘটনা একথা কোন কোন লোক স্বীকার করেন না। প্রথমে তাদের কাছে দু’জন নবী আগমন করেন। তারা তাদেরকে অস্বীকার করলে তাঁদের শক্তি বৃদ্ধিকল্পে তৃতীয় একজন নবী আসেন। প্রথম দু'জন নবীর নাম ছিল শামউন ও বুহনা এবং তৃতীয়জনের নাম ছিল বুলাস। তাঁরা তিনজনই বলেনঃ “আমরা আল্লাহর প্রেরিত যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমাদের মাধ্যমে তোমাদেরকে হুকুম করেছেন যে, তোমরা তাঁর ছাড়া আর কারো ইবাদত করবে না।”
হযরত কাতাদা ইবনে দাআমাহ (রঃ)-এর ধারণা এই যে, এই তিনজন বুযর্গ ব্যক্তি হযরত ঈসা (আঃ)-এর প্রেরিত ছিলেন। ঐ গ্রামের লোকগুলো তাদেরকে বললোঃ “তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ। তাহলে এমন কি কারণ থাকতে পারে যে, তোমাদের কাছে আল্লাহর অহী আসবে আর আমাদের কাছে আসবে না? হ্যা, তোমরা যদি রাসূল হতে তবে তোমরা ফেরেশতা হতে।” অধিকাংশ কাফিরই নিজ নিজ যুগের রাসূলদের সামনে এই সন্দেহই পেশ করেছিল। যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “ওটা এ কারণে যে, তাদের কাছে তাদের রাসূলগণ দলীল প্রমাণসহ আগমন করতো তখন তারা বলতোঃ মানুষ কি আমাদেরকে হিদায়াত করবে?”(৬৪:৬) অন্য আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ তারা বলেছিল- তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ, তোমরা চাচ্ছ যে, আমাদের পিতৃপুরুষরা যাদের ইবাদত করতো তা হতে আমাদেরকে ফিরিয়ে দিবে, সুতরাং আমাদের কাছে প্রকাশ্য দলীল আনয়ন কর।”(১৪:১০) আর এক জায়গায় আছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “তোমরা যদি তোমাদের মত মানুষের আনুগত্য কর তাহলে অবশ্যই তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে।”(২৩:৩৪) আল্লাহ তা'আলা আরো বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “মানুষকে তাদের কাছে হিদায়াত আসার পর ওর উপর ঈমান আনতে শুধু এটাই বাধা দিয়েছে যে, তারা বলেঃ আল্লাহ কি মানুষকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন?”(১৭:৯৪) এই কথা ঐ লোকগুলোও তিনজন নবীকে বলেছিলঃ “তোমরা আমাদের মতই মানুষ। আসলে আল্লাহ কিছুই অবতীর্ণ করেননি। তোমরা মিথ্যা কথা বলছো।” নবীগণ উত্তরে বললেনঃ আল্লাহ্ খুব ভাল জানেন যে, আমরা তাঁর সত্য রাসূল। যদি আমরা মিথ্যাবাদী হতাম তবে আল্লাহ তা'আলা অবশ্যই আমাদেরকে মিথ্যা বলার শাস্তি প্রদান করতেন। কিন্তু তোমরা দেখতে পাবে যে, তিনি আমাদের সাহায্য করবেন এবং আমাদেরকে সম্মানিত করবেন। ঐ সময় তোমাদের কাছে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে, পরিণাম হিসাবে কে ভাল! যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। আকাশসমূহে ও যমীনে যা কিছু আছে সবই তিনি জানেন, আর যারা বাতিলের উপর ঈমান এনেছে ও আল্লাহকে অস্বীকার করেছে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।`(২৯:৫২)
নবীগণ বললেনঃ স্পষ্টভাবে পৌছিয়ে দেয়াই শুধু আমাদের দায়িত্ব। মানলে তোমাদেরই লাভ, আর না মানলে তোমাদেরকেই এ জন্যে অনুতাপ করতে হবে। আমাদের কোন ক্ষতি নেই। কাল তোমাদেরকে তোমাদের কৃতকর্মের ফল ভোগ করতে হবে।
সতর্কবার্তা
কুরআনের কো্নো অনুবাদ ১০০% নির্ভুল হতে পারে না এবং এটি কুরআন পাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এখানে বাংলা ভাষায় অনূদিত প্রায় ৮ জন অনুবাদকের অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা তাদের নির্ভুলতার গ্যারান্টি দিতে পারি না।