সূরা আল-আনকাবূত (আয়াত: 30)
হরকত ছাড়া:
قال رب انصرني على القوم المفسدين ﴿٣٠﴾
হরকত সহ:
قَالَ رَبِّ انْصُرْنِیْ عَلَی الْقَوْمِ الْمُفْسِدِیْنَ ﴿۳۰﴾
উচ্চারণ: কা-লা রাব্বিনসুরনী ‘আলাল কাওমিল মুফছিদীন।
আল বায়ান: সে বলল, ‘হে আমার রব, আমাকে সাহায্য করুন ফাসাদ সৃষ্টিকারী কওমের বিরুদ্ধে’।
আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া: ৩০. তিনি বললেন, হে আমার রব! বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করুন।
তাইসীরুল ক্বুরআন: সে বলল- হে আমার প্রতিপালক! ফাসাদ সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর।
আহসানুল বায়ান: (৩০) সে বলল,[1] ‘হে আমার প্রতিপালক! বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর।’
মুজিবুর রহমান: সে বললঃ হে আমার রাব্ব! বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করুন।
ফযলুর রহমান: লূত বলল, “প্রভু! অনর্থ সৃষ্টিকারী লোকদের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর।”
মুহিউদ্দিন খান: সে বলল, হে আমার পালনকর্তা, দুস্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর।
জহুরুল হক: তিনি বললেন -- "আমার প্রভু! আমাকে ফেসাদ সৃষ্টিকারী লোকদের বিরুদ্ধে সাহায্য করো।"
Sahih International: He said, "My Lord, support me against the corrupting people."
তাফসীরে যাকারিয়া
অনুবাদ: ৩০. তিনি বললেন, হে আমার রব! বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করুন।
তাফসীর:
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অনুবাদ: (৩০) সে বলল,[1] ‘হে আমার প্রতিপালক! বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর।”
তাফসীর:
[1] অর্থাৎ, যখন লূত (আঃ) নিজ জাতির সংস্কার হতে সম্পূর্ণ নিরাশ হয়ে গেলেন, তখন মহান আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করলেন।
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ
তাফসীর: ২৮-৪০ নং আয়াতের তাফসীর:
(وَلُوْطًا اِذْ قَالَ لِقَوْمِھ۪ٓ د... لِّقَوْمٍ یَّعْقِلُوْنَ)
এখানে লূত (عليه السلام)-এর অবাধ্য জাতিকে তাদের অশ্লীল কার্যকলাপের জন্য যেভাবে তাদেরকে ধ্বংস করা হয়েছিল সে কথাই বিবৃত হয়েছে। এ সম্পর্কে সূরা হূদের ৭৬-৮৩ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
(وَاِلٰی مَدْیَنَ اَخَاھُمْ شُعَیْبًا.... فَاَصْبَحُوْا فِیْ دَارِھِمْ جٰثِمِیْنَ)
অত্র আয়াতগুলোতে শুআইব (عليه السلام) তাঁর জাতিকে তাওহীদের দাওয়াত প্রদান, বান্দার হক সম্পর্কে সচেতনকরণ এবং তাঁর ডাকে সাড়া না দেয়ার কারণে তাঁর জাতিকে যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল সে কথাই ব্যক্ত করা হয়েছে। এদের সম্পর্কে সূরা আ‘রাফের ৮৫-৯৩ ও হূদের ৮৪-৯৫ নং আয়াতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
(وَعَادًا وَّثَمُوْدَ وَقَدْ تَّبَیَّنَ لَکُمْ مِّنْ مَّسٰکِنِھِمْ....... وَمَا کَانَ اللہُ لِیَظْلِمَھُمْ وَلٰکِنْ کَانُوْٓا اَنْفُسَھُمْ یَظْلِمُوْنَ)
উক্ত আয়াতগুলোতে বিভিন্ন ঔদ্ধত্য প্রকাশকারী বিভিন্ন জাতি যেমন আ‘দ, সামূদ ও ব্যক্তি যেমন কারূন, হামান, ফির‘আউনন তাদেরকে যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল ও তারা পৃথিবীতে যে সকল কার্যকলাপ করত তারই ঘটনা উল্লিখিত হয়েছে। এ সম্পর্কে সূরা আ‘রাফে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
তাফসীরে ইবনে কাসীর (তাহক্বীক ছাড়া)
তাফসীর: ২৮-৩০ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তা'আলা তার নবী হযরত লূত (আঃ) সম্পর্কে সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি তাঁর কওমকে তাদের বদভ্যাস হতে বাধা দিতে থাকেন। তাদেরকে তিনি বলেনঃ “তোমাদের মত অশ্লীল কর্ম তোমাদের পূর্বে বিশ্বে কেউই করেনি। কুফরী, রাসূলকে অবিশ্বাস, আল্লাহর হুকুমের বিরোধিতা ইত্যাদি তো তারা করতোই, কিন্তু তারা পুরুষে উপগত হতো, যে কাজ তাদের পূর্বে ভূ-পৃষ্ঠে কেউ কখনো করেনি।
দ্বিতীয় বদভ্যাস তাদের এই ছিল যে, তারা রাহাজানি করতো, লুটপাট করতো, হত্যা করতো এবং অশান্তি ও বিশৃংখলা সৃষ্টি করতো। নিজেদের মজলিসে, সভা-সমিতিতে তারা প্রকাশ্যে ঘৃণ্য কর্মে লিপ্ত হয়ে পড়তো। কেউ কাউকেও বাধা দিতো না। এমন কি কেউ কেউ তো বলেন যে, হস্তমৈথুনও তারা প্রকাশ্যভাবে করতো। তারা পরস্পর গুহ্যদ্বার দিয়ে বায় ছেড়ে দিয়ে হো হো করে হাসতো, ভেড়া লড়াতো, মোরগ লড়াতো এবং এ ধরনের আরো বহু অসার ও বাজে কাজে তারা লিপ্ত থাকতো। প্রকাশ্যভাবে আমোদ-ফুর্তি করে তারা পাপের কাজ করতো। হাদীস শরীফে আছে যে, তারা পথচারীদের সামনে চীৎকার ও হট্টগোল করতো এবং তাদের দিকে পাথর নিক্ষেপ করতো। তারা বাঁশী বাজাতো, কবুতর উড়াতো ও উলঙ্গ হয়ে যেতো। কুফরী, হঠকারিতা এবং ঔদ্ধত্যপনা তাদের এতো বেড়ে গিয়েছিল যে, নবী (আঃ)-এর উপদেশের জবাবে তাঁকে তারা বলতোঃ “ছেড়ে দাও তোমার উপদেশবাণী। যদি তুমি সত্যবাদী হও তবে আমাদের উপর আল্লাহর শাস্তি আনয়ন কর।” শেষে অসহ্য হয়ে হযরত লুত (আঃ) আল্লাহর সামনে হাত বাড়িয়ে দিয়ে প্রার্থনা করেনঃ “হে আমার প্রতিপালক! বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করুন।”
সতর্কবার্তা
কুরআনের কো্নো অনুবাদ ১০০% নির্ভুল হতে পারে না এবং এটি কুরআন পাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এখানে বাংলা ভাষায় অনূদিত প্রায় ৮ জন অনুবাদকের অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা তাদের নির্ভুলতার গ্যারান্টি দিতে পারি না।