আল কুরআন


সূরা আল-কাহফ (আয়াত: 30)

সূরা আল-কাহফ (আয়াত: 30)



হরকত ছাড়া:

إن الذين آمنوا وعملوا الصالحات إنا لا نضيع أجر من أحسن عملا ﴿٣٠﴾




হরকত সহ:

اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ اِنَّا لَا نُضِیْعُ اَجْرَ مَنْ اَحْسَنَ عَمَلًا ﴿ۚ۳۰﴾




উচ্চারণ: ইন্নাল্লাযীনা আ-মানূওয়া‘আমিলুসসা-লিহা-তি ইন্না-লা-নুদী‘উ আজরা মান আহছানা ‘আমালা-।




আল বায়ান: নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, নিশ্চয় আমি এমন কারো প্রতিদান নষ্ট করব না, যে সুকর্ম করেছে।




আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া: ৩০. নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে – আমরা তো তার শ্ৰমফল নষ্ট করি না- যে উত্তমরূপে কাজ সম্পাদন করেছে।




তাইসীরুল ক্বুরআন: যারা ঈমান আনে আর সৎ কাজ করে- যে উত্তমভাবে কাজ করে আমি তার কর্মফল বিনষ্ট করি না।




আহসানুল বায়ান: (৩০) যারা বিশ্বাস রাখে ও সৎকর্ম করে, আমি তাদেরকে পুরস্কৃত করি। যে ভালো কর্ম করে, আমি তার কর্মফল নষ্ট করি না। [1]



মুজিবুর রহমান: যারা বিশ্বাস করে এবং সৎ কাজ করে আমি তাদেরকে পুরস্কৃত করি, যে সৎ কাজ করে আমি তার কর্মফল নষ্ট করিনা।



ফযলুর রহমান: যারা বিশ্বাস করে আর সৎকাজ করে আমি তো (সেই) সৎকর্মশীলদের পুরস্কার নষ্ট করি না।



মুহিউদ্দিন খান: যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কার নষ্ট করি না।



জহুরুল হক: নিঃসন্দেহ যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করছে -- আমরা নিশ্চয়ই যারা ভাল কাজ করে তাদের কর্মফল ব্যর্থ করি না।



Sahih International: Indeed, those who have believed and done righteous deeds - indeed, We will not allow to be lost the reward of any who did well in deeds.



তাফসীরে যাকারিয়া

অনুবাদ: ৩০. নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে – আমরা তো তার শ্ৰমফল নষ্ট করি না- যে উত্তমরূপে কাজ সম্পাদন করেছে।


তাফসীর:

-


তাফসীরে আহসানুল বায়ান

অনুবাদ: (৩০) যারা বিশ্বাস রাখে ও সৎকর্ম করে, আমি তাদেরকে পুরস্কৃত করি। যে ভালো কর্ম করে, আমি তার কর্মফল নষ্ট করি না। [1]


তাফসীর:

[1] কুরআনের বর্ণনা-রীতি অনুযায়ী জাহান্নামীদের পর জান্নাতীদের কথা আলোচনা করা হচ্ছে। যাতে মানুষের মধ্যে জান্নাত লাভের প্রেরণা ও উৎসাহ সৃষ্টি হয়।


তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ


তাফসীর: ২৭-৩১ নং আয়াতের তাফসীর:



আল্লাহ তা‘আলা গুহাবাসীর ঘটনা বর্ণনা করার পর তাঁর রাসূলকে নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি যেন তাঁর প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা তেলাওয়াত করেন। এখানে তেলাওয়াতের অর্থ হল ওয়াহী অনুসরণ করা, আদেশ-নিষেধগুলো পালন করা। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:



(اِتَّبِعْ مَآ أُوْحِيَ إِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ ج لَآ إِلٰهَ إِلَّا هُوَ ج وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِيْنَ)‏



“তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে তোমার প্রতি যা ওয়াহী হয় তুমি তারই অনুসরণ কর, তিনি ব্যতীত অন্য কোন সত্যিকার ইলাহ নেই এবং মুশরিকদের হতে মুখ ফিরিয়ে নাও।” (সূরা আনয়াম ৬:১০৬)



আল্লাহ তা‘আলার বাণীর পরিবর্তন করার মত কেউ নেই। কেননা আল্লাহ তা‘আলার এই বাণী বা নির্দেশ সত্য ও ন্যায়সঙ্গত। এতে কোন প্রকার মিথ্যা বা বাতিল কোন কিছুর নির্দেশ প্রদান করা হয়নি। যার ফলে এ বাণী সুপ্রতিষ্ঠিত ও অপরিবর্তনীয়। সুতরাং যদি কেউ তা পরিবর্তন করার চেষ্টা করে তাহলে আল্লাহ তা‘আলার পাকড়াও থেকে কেউ তাকে রক্ষা করতে পারবে না। কারণ আল্লাহ তা‘আলা ই হলেন একমাত্র আশ্রয় দাতা, তিনি ছাড়া আর কোন আশ্রয়দাতা নেই।



অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে সকলকে নির্দেশ প্রদান করেছেন। তাদের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখ যারা সকাল-সন্ধ্যা নিজেকে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতে মগ্ন রাখে। তারা আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত করে। আর তাদের সঙ্গ বর্জন করে তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে দুনিয়ার সৌন্দর্যের প্রতি দৃষ্টিপাত কর না।



যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী:



(وَلَا تَطْرُدِ الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَدٰوةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيْدُوْنَ وَجْهَه۫ ط مَا عَلَيْكَ مِنْ حِسَابِهِمْ مِّنْ شَيْءٍ وَّمَا مِنْ حِسَابِكَ عَلَيْهِمْ مِّنْ شَيْءٍ فَتَطْرُدَهُمْ فَتَكُوْنَ مِنَ الظّٰلِمِيْنَ)‏



“যারা তাদের প্রতিপালককে সকালে ও সন্ধ্যায় তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ডাকে তাদেরকে তুমি বিতাড়িত কর না। তাদের কর্মের জবাবদিহির দায়িত্ব তোমার নয় এবং তোমার কোন কর্মের জবাবদিহির দায়িত্ব তাদের নয় যে, তুমি তাদেরকে বিতাড়িত করবে; করলে তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (সূরা আন‘আম ৬:৫২)



তাই সর্বদা সৎ লোকদের সংস্পর্শে থাকার চেষ্টা করতে হবে, অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে।



কেননা যারা কুফরী করবে তারা আখিরাতে নাজাত লাভ করবে না। তারা তথায় আগুনের মধ্যে কঠিন শাস্তি ভোগ করবে। আর তথায় পানীয় হিসেবে তাদেরকে দেয়া হবে গলিত ধাতুর ন্যায় পানীয়। যেমনটি সূরা ইউনুসে আলোচনা করা হয়েছে।



আর যারা ভাল কাজ করবে ও ঈমান আনবে তারা নহরসমূহ প্রবাহিত চিরস্থায়ী জান্নাতে বসবাস করবে। তারা তথায় স্বর্ণের কংকন দ্বারা অলংকৃত হবে এবং তারা পরিধান করবে সূক্ষ্ম ও স্থ’ুল রেশমের সবুজ বস্ত্র ও সমাসীন হবে সুসজ্জিত আসনে। এ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আলোচনা আসবে সূরা গাশিয়ায় ইনশা-আল্লাহ তা‘আলা।



আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:



১. মানুষের মাঝে দীনি তাবলীগ করতে হবে তবে বৈধ পন্থায়, অবৈধ পন্থায় নয়।

২. নিজেকে সৎ লোকদের সংস্পর্শে রাখতে হবে।

৩. যারা অসৎ লোক তাদের অনুসরণ করা যাবে না।

৪. যারা কুফরী করবে তারা জাহান্নামে যাবে আর যারা ভাল কাজ করবে তারা জান্নাতে যাবে এবং সেখানে অফুরন্ত নেয়ামত লাভ করে।


তাফসীরে ইবনে কাসীর (তাহক্বীক ছাড়া)


তাফসীর: ৩০-৩১ নং আয়াতের তাফসীর:

পাপীদের দুরাবস্থার কথা বর্ণনা করার পর এখানে মহান আল্লাহ পুণ্যবানদের পরিণামের বর্ণনা দিচ্ছেন। এরা আল্লাহ ও তার রাসূলকে (সঃ) মান্যকারী এবং তাদের কিতাবকেও মান্যকারী। তারা সকার্যাবলী সম্পাদনকারী। সূতরাং তাদের জন্যে রয়েছে চিরস্থায়ী জান্নাত। এই জান্নাতের প্রাসাদ ও বাগ-বাগিচার নিম্নদেশ দিয়ে নদ-নদী প্রবাহিত রয়েছে। তাদেরকে অলংকার, বিশেষ করে সোনা কংকনও পরানো হবে। ঐ পোষাকগুলির কোনটি হবে নরম পাতলা এবং কোনটি হবে নরম মোটা। সেখানে তারা গদির আসনে হেলান লাগিয়ে অত্যন্ত শানশওকতের সাথে পরম সুখে বসবাস করবে। বলা হয়েছে যে, চার জানু হয়ে বসাকেও (আরবী) বলে। খুব সম্ভব এখানে অর্থ এটাই হবে। যেমন হাদীসে রয়েছে যে, (আরবী) করে অর্থাৎ চার জানু হয়ে বসে খানা খাওয়া ঠিক নয়। (আরবী) শব্দটি (আরবী) শব্দের বহু বচন। এর অর্থ হচ্ছে চৌকি, ছাপর খাট ইত্যাদি।

মহান আল্লাহ বলেনঃ তাদের পুরস্কার কতই না উত্তম এবং ওটা কতই না আরামদায়ক জায়গা! এটা জাহান্নামীদের বিপরীত। তাদেরকে সেখানে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে এবং তাদের বাসস্থান কতই না জঘন্য ও নিকৃষ্ট! সূরায়ে ফুরকানেও এই দুই দলের বর্ণনা এ রকমই পরস্পর বিরোধী রূপে দেয়া হয়েছে।





সতর্কবার্তা
কুরআনের কো্নো অনুবাদ ১০০% নির্ভুল হতে পারে না এবং এটি কুরআন পাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। আমরা এখানে বাংলা ভাষায় অনূদিত প্রায় ৮ জন অনুবাদকের অনুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমরা তাদের নির্ভুলতার গ্যারান্টি দিতে পারি না।